পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর শহরের ২৭ নং ওয়ার্ডের (পুরী গেটের) বাসিন্দা অনু শর্মা'র একমাত্র সন্তান ভীম শর্মা (২০) গত মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভয়াবহ বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনায় তাঁর পায়ের হাড় মাংস সমেত বাইরে বেরিয়ে চলে আসে বলে জানিয়েছেন অনু দেবী। বুধবার ভোরবেলা তিনি নিজের সন্তানকে মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকেরা জানান, জটিল অপারেশন প্রয়োজন। অবিলম্বে, ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা লাগবে। তবে, 'স্বাস্থ্যসাথী' কার্ড থাকলে টাকা লাগবেনা।
advertisement
অনুদেবী নিজের সন্তানকে নিয়ে একাই থাকেন। তিনি এতদিন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করাতে পারেননি! চরম অসহায় অবস্থায় তিনি নিজের ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মী জনৈক সঞ্জয়বাবুর সাথে যোগাযোগ করেন। তাঁর মাধ্যমে যোগাযোগ হয় ২৩ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা অমিত পান্ডের সঙ্গে। অমিতবাবু ওই মহিলাকে নিয়ে যান খড়্গপুরের মহাকুমা শাসক (SDO) আজমল হোসেনের কাছে। নজিরবিহীন তৎপরতায় তিনি মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যে অনু শর্মার হাতে 'স্বাস্থ্যসাথী' কার্ড তুলে দেন।
আজ ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভীম শর্মার পায়ের জটিল অপারেশন সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।
ইতিপূর্বে, জরুরি সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দ্রুততার সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু, এত দ্রুত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে তুলে দেওয়ার খবর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই প্রথম বলেই দাবি সরকারি আধিকারিকদেরও৷ চোখের জল মুছতে মুছতে অনু দেবী আজ সংবাদমাধ্যমের সামনে বললেন, 'প্রায় ২ লক্ষ টাকা অপারেশনের খরচ শুনে আমি মারাত্মক দুঃশ্চিন্তার মধ্যে পড়ি। আমি কোনওভাবেই এত টাকা জোগাড় করতে পারতামনা! ধন্যবাদ জানাই আমাদের ওয়ার্ডের সঞ্জয় দা'কে এবং অমিত পান্ডে মহাশয়কে। আর আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব এসডিও সাহেবের কাছে! মাত্র এক-দেড় ঘন্টার মধ্যে আমার হাতে উনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেন। আমার অন্তরের অন্তর্স্থল থেকে প্রণাম জানাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই ঋণ কোনওদিন পরিশোধ করতে পারবনা। অসহায় পরিবারের জন্য এই কার্ড যে কত মূল্যবান উপলব্ধি করতে পারলাম। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসককেও ধন্যবাদ জানাই আমাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য।'
Shankar Rai
