মৃত ছাত্রের বাবা নীরদবরণ মণ্ডল জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ বিনয় স্কুলে গেলে এক সহপাঠী আরও কয়েক জন ছাত্রকে হজমোলার মত দেখতে ওই কীটনাশক দেয়। প্রথমে বিনয়ই সেটি খায়। খাবার পরই বমি করতে শুরু করে। তাকে বমি করতে দেখে অন্য ছাত্ররা সেটি না খেয়েই ফেলে দেয়। বারবার বমি করার পর অসুস্থ হয়ে পরে বিনয়। এই অবস্থায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুলেই তার প্রাথমিক শ্রুশ্রুষা করতে থাকেন। কিন্তু অসুস্থতা বাড়ায় তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান।
advertisement
খবর পেয়েই ছুটে আসেন ছাত্রটির বাবা। বিনয়কে নিয়ে আসা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে তার চিকিৎসা শুরু হলেও রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়ে খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীন বাগ ছাত্রের বাবার সঙ্গে কথা বলতে বর্ধমান মেডিক্যালের পুলিশ মর্গে যান।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জন দত্ত জানিয়েছেন, বুধবার তাঁর বিদ্যালয়ে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এক ছাত্র বিদ্যালয়ে আসার পথে একটি প্যাকেট কুড়িয়ে পায়। সেই প্যাকেটে মাটি রংয়ের কয়েকটি হজমোলার মতো দেখতে জিনিস ছিল। স্কুল শুরুর আগে সে অন্য কয়েকজন ছাত্রকে হজমোলা ভেবে খেতে দিয়েছিল। বেশির ভাগ ছাত্র বাজে গন্ধ পেয়ে সেটি ফেলে দেয়। কিন্তু বিনয় মণ্ডল নামে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রটি সেটির কিছুটা খেয়ে ফেলে। সকাল ১১ টার পর ছাত্রটি শ্রেণিকক্ষে বমি করতে শুরু করে।
প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, তাঁরা প্রথমে ভেবেছিলেন গ্যাস বা অম্বলজনিত কারণে ছাত্রটি বমি করছে। কিন্তু ঘনঘন কয়েকবার বমি করায় জানতে চাওয়া হলে ওই হজমোলা খাওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। এরপর দেরী না করে ছাত্রটির বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ছাত্রটিকে নিকটবর্তী ডাক্তারখানা ও পরে মাধপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই ছাত্রটিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পাঠানো হয়। এরই পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অন্য ছাত্রদের কাছ থেকে ওই বিষাক্ত বস্তুগুলো সংগ্রহ করে ফেলে দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্রটি চিকিৎসা চলাকালীন অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিল বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি জানতে পারেন গতকাল রাত প্রায় ১২টা নাগাদ ছাত্রটি মারা গিয়েছে। খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। এইভাবে একটা ছোট্ট শিশু অকালে চলে গেল ভেবে খুব কষ্ট হচ্ছে। এই ঘটনায় কুলে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।