নামে কি বা আসে যায়। কর্মেই পরিচয়। কথাটা হয়ত ঠিক। তবু । আসে যায়। আর সেই নাম যদি হয় তারাপীঠের মন্দির তৈরির কারিগরদের?
তারা পীঠ। তারা-মায়ের মন্দির । দ্বারকা নদীর ধারে রামপুরহাট থেকে ছ কিলোমিটার দূরে ছোট্ট মন্দিরনগরী। মন্দির সংলগ্ন মহাশ্মশান। বছর ভর এই শক্তিপীঠে ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু কজন নজর করেন মন্দিরের বারান্দার ঠিক নীচে এই ফলকটি?
advertisement
ঠিক করে নজর করলে দেখতে পাবেন ঝাপসা হয়ে আসা চোদ্দটি নাম। কেউ বলেন পাঁচশো। কেউ বলেন সাতশো বছরের ইতিহাস। সেই সময় এই জায়গার নাম ছিল চন্ডীপুর। ঘন জঙ্গল। গাছমছমে পরিবেশ। দ্বারকা নদী দিয়ে ব্যবসা করতে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী জয় দত্ত সদাগর। চন্ডীপুরে তাঁর ছেলেকে সাপে কাটে।
লোকশ্রুতি, এখানে দ্বারকার জল খেয়ে নাকি প্রাণ ফিরে পায় ছেলে। তারপরই এখানকার শ্মশানে সাধনা করতে শুরু করেন সদাগর। স্বপ্নাদেশে শ্মশানেই তারামায়ের শিলামূর্তির হদিশ পান তিনি। পরে মন্দির করেন মল্লারপুরের জমিদার।
অনেকেই হয়ত জানেন এই গল্প। কিন্তু চেনেন কি মন্দির তৈরির কারিগরদের? টেরাকোটা, পাথর দিয়ে তৈরি মন্দির তৈরিতে কতটা কষ্ট , পরিশ্রম লুকিয়ে ছিল, তার খবর কজন রাখেন? কিন্তু মন্দির প্রতিষ্ঠাতা ভুলে যাননি কারিগরদের কথা। পাথরের ফলকে পর পর নাম লেখা চোদ্দজন শ্রমিকের।
মন্দির তো অনেক আছে। শক্তিপীঠও আছে। কিন্তু এমন কারিগর পুজোর খবর খুব একটা পাওয়া যায় না। এখানেই বোধহয় তারা-মায়ের মন্দির আক্ষরিক অর্থেই শক্তিপীঠ।