সময়টা তখন বামফ্রন্ট জমানা ৷ বাম সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জিন্দাল গোষ্ঠী এই শালবনিতেই ব্লু প্রিন্ট সেরে ফেলেছিলেন স্টিল প্ল্যান্ট তৈরি করার ৷ সেই অনুযায়ী, শিলান্যাসও হয়েছিল নিয়ম মেনে ৷ শিলান্যাস থেকে ফেরার সময়ই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে সামনে বোমা বিস্ফোরণ হয় ৷ দুস্কৃতিদের ধরার নামে পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শালবনিসহ গোটা জঙ্গলমহল ৷ শিল্পের নামে আদিবাসীদের হাত থেকে জমি চলে যাওয়ার ভয় পেয়ে তপ্ত হয়ে ওঠে শালবনির মাটি৷ সে ঘটনা এখন ইতিহাস ৷ জিন্দালরা ফিরিয়ে দেয় অধিগ্রহণ করা জমি ৷ সেই সময় থমকে যায়, এশিয়ার সবচেয়ে বড় স্টিল প্ল্যান্টের পরিকল্পনা ৷ সময় যায় এগিয়ে ৷ সরকারে আসে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ ধীরে ধীরে ফের উজ্জীবিত হতে শুরু করে শালবনিতে শিল্পের স্বপ্ন ৷ জঙ্গলমহল এখন রয়েছে খোশমেজাজে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নতুন রূপ পেয়েছে শালবনি৷
advertisement
বুধবার জিন্দালদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ‘শালবনিতে শিল্প আসছে ৷ আমি সত্যিই খুব খুশি ৷ নতুন বছরে নতুন উপহারের মতো জিন্দালদের এই সিমেন্ট কারখানা ৷ এই কারখানায় সবার যাতে কর্মসংস্থান হয় তা নিয়ে অনুরোধ করেছি জিন্দালদের ৷ ধাপে ধাপে সবাই চাকরী পাবে এই কারখানায় ৷’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা আরও বলেন, ‘শুধু সিমেন্ট কারখানা নয়৷ এরপর রঙের কারাখানা ও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রও হবে এই শালবনিতে ৷ জিন্দালরা খুব ভদ্র মানুষ, এঁদের সঙ্গে ভদ্র ব্যবহার করবে৷ শিল্পের হাত ধরে বাংলাকে বিশ্বের সেরা ডেস্টিনেশন করতে হবে৷’
অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নতুন প্রজন্মের জন্যও বার্তা দিতে ভুললেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর কথায়, ‘কাজ করে যান, হতাশ হবেন না ৷ নতুন প্রজন্মকে দাঁজ করানোর দায়িত্ব আমাদের ৷ কর্মস্থানের যোগ্য পরিকাঠামো গড়ে তুলছি রাজ্যে ৷ শান্তিত গড়ে উঠুক শিল্প ৷ ওরা ওদের কাজ করুক, আমরা আমাদের কাজ করব ৷ আমি চাই আমরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করি ৷’
(ছবি পিটিআই-এর সৌজন্যে)