পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ও এগরা এলাকায় কেউ কেউ আবার প্রাণঘাতী কামড়ের শিকারও হয়েছেন। পটাশপুরের দক্ষিণ খাড় গ্রামের যুবক কানু পাত্র বর্তমানে সাপের কামড়ে গুরুতর অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। কয়েকদিন আগেই একই গ্রামের যতীন প্রামানিকও সাপের কামড়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
চাষিদের দাবি, এ বছর মাঠে চন্দ্রবোড়া সাপের উপদ্রব অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি। জমিতে ধান পেকে গেলেও শেষ মুহূর্তের কীটনাশক স্প্রে করতে পারছেন না তাঁরা। পটাশপুর দুই ব্লকের কৃষক শীবনারায়ণ পাত্র বলেন, “মাঠে ধান পাকতে যায়। কিন্তু কীটনাশক না ছড়ালে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। জমিতে নামলেই ভয় পাচ্ছি, কারণ আমাদের গ্রামেরই দুই যুবক সাপের কামড়ে হাসপাতালে ভর্তি। এখন বুঝতে পারছি না কী করব।”
advertisement
কৃষকদের দাবি, সাপগুলো এমন ভাবে মিশে থাকে ধান গাছের সঙ্গে যে বোঝারই উপায় নেই কোথায় লুকিয়ে আছে। চন্দ্রবোড়া সাপ সাধারণত নড়াচড়া কম করে, তাই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
যদিও কৃষি দফতর আশ্বাস দিয়েছে দ্রুত সমাধানের। এগরা ১ নম্বর ব্লকের কৃষি আধিকারিক রিয়াসেন মণ্ডল জানান, “আমরা খুব শীঘ্রই ড্রোনের মাধ্যমে জমিতে কীটনাশক স্প্রে করার ব্যবস্থা নেব। এতে কৃষকরা মাঠে না নেমেও নিরাপদে কীটনাশক স্প্রে করতে পারবেন। আমরা চেষ্টা করছি এই পদ্ধতি যত দ্রুত সম্ভব চালু করার।”
আরও পড়ুন- অল্প পুঁজি থাকলেও হবে! উপার্জনের নতুন রাস্তা দেখাচ্ছে জিম!
সর্প বিশেষজ্ঞ ও জীববিজ্ঞানীদের মতে, এই সময় মাঠে সাপের আতঙ্ক অনেকটাই বেড়েছে। এগরা পুরসভার জীববৈচিত্র্য কমিটির সভাপতি ও এগরা কলেজের অধ্যাপক ড. সুদীপ্ত কুমার ঘোড়াই জানান, “ধান পাকার সময় মাঠে প্রচুর ইঁদুর দেখা যায়। ইঁদুর খাওয়ার লোভেই সাপেরা মাঠে আসে। এছাড়া এখন চন্দ্রবোড়া সাপের বাচ্চা দেওয়ার সময়, তাই কিছু জমিতে তাদের উপদ্রব অনেকটাই বেড়েছে।”
তিনি আরও জানান, “কেউটে সাপ কিছুদিনের মধ্যেই শীতঘুমে চলে যাবে, তবে কৃষকদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।” কৃষি জমিতে সাপের বাড়বাড়ন্তে ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন চাষিরা। তবে কৃষি দফতরের উদ্যোগে ড্রোন স্প্রে ব্যবস্থা চালু হলে কিছুটা স্বস্তি মিলবে আশাবাদী তাঁরা।
