TRENDING:

Simlagarh Kali Mandir: মায়ের সামনে নরবলি! ভোগে মাছের কালিয়া-সহ ১০৮ রকম পদ, সিমলাগড়ের দক্ষিণা কালী ভক্তদের মনস্কামনা অপূর্ণ রাখেন না

Last Updated:

Simlagarh Kali Mandir: প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো পাণ্ডুয়ার সিমলাগড়ের দক্ষিণা কালী। লোকমুখে শোনা যায়, ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ডাকাতরা ঘন জঙ্গলে এসে নরবলি দিত মা কালীর সামনে। কালীপুজোর দিন ১০৮ রকমের ভোগ নিবেদন করা হয় মাকে। তবে মা পছন্দ করেন সন্দেশ।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
পান্ডুয়া, হুগলি, সোমনাথ ঘোষ: মাছের কালিয়া আর সব রকম সবজি রান্না করে ভোগ দেওয়া হয় মাকে। নরবলি বন্ধ হয়েছিল এক তান্ত্রিকের চাপে। গ্রামের নাম ছিল হরিহরপুর,পরে হয় সিমলাগড়। এই সিমলাগড় কালীকে নিয়ে আছে নানা কাহিনি।
সিমলাগড় কালী মন্দির
সিমলাগড় কালী মন্দির
advertisement

প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো পাণ্ডুয়ার সিমলাগড়ের দক্ষিণা কালী। শোনা যায় শেরশাহ জিটি রোড তৈরি করার আগে এই পুজো শুরু হয়েছিল। সেই সময় ওই এলাকা ছিল শ্মশান ও জঙ্গলে ভরা। ছিল না কোনও জনবসতি। মানুষ ওই এলাকায় যেতে ভয় পেতেন। ঠ‍্যাঙ্গারে বাহিনীর উৎপাত ছিল। লোকশ্রুতি আছে, সেই সময় ওই এলাকার এক পুকুর পাড়ে এক কাপালিকের তাল পাতার ছাউনি দেওয়া একটি ঘর ছিল। সেখানে পঞ্চমুন্ডির আসনে বসে ওই কাপালিক মা কালীর সাধনা করতেন। লোকমুখে শোনা যায়, ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ডাকাতরা ঘন জঙ্গলে এসে নরবলি দিত মা কালীর সামনে। এক সময় রঘু ডাকাতও গিয়ে কালী সাধনা করেছেন বলেও জানা যায় স্থানীয় ইতিহাস থেকে।

advertisement

আরও পড়ুনঃ একান্ন সতীপীঠের অন্যতম! সতীর বাম পায়ের গোড়ালি পড়েছিল এখানে, দীপান্বিতা অমাবস্যায় বর্গভীমা মন্দিরে বিশেষ পুজোপাঠ

একদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন চলাচলের জন্য এই রাস্তার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। তখনই স্থানীয় মানুষ ভয় কাটিয়ে ওই মন্দিরে পুজো দিতে শুরু করে। এরপরে কালী মন্দিরের উপরে মানুষের বিশ্বাস ক্রমশ বাড়তে থাকে। লক্ষণ ভট্টাচার্যর পরিবারের আদি পুরুষের আমল থেকেই এই কালীপুজো শুরু হয়েছিল। এই কালী মন্দিরে দেবী কালিকা পূজিতা হন দক্ষিণা কালী রূপে। কয়েক শতাব্দী আগে তখনও পাণ্ডুয়ার সিমলাগড় নামে কোনও গ্রাম ছিল না। এলাকার নাম ছিল হরিহরপুর। সিমলাগড় কালীর নামে এলাকার নাম হয়েছে সিমলাগড়। মন্দিরেই প্রতিষ্ঠিত ছিলেন এক মৃন্ময়ী কালী মূর্তি। আলাদা করে কোনও নাম ছিল না, দেবী কালিকার। শ্মশানে থাকার জন্য লোকে বলত শ্মশানে কালী আবার কেউ বলেন ডাকাত কালী। শোনা যায়, ওই পরিবারের এক তান্ত্রিক নটোবর ভট্টাচার্য মা কালীর পুজো করতে গিয়ে দেখেন মন্দিরের সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে নরমুন্ড। তখন দেবীর পুজো না করে তিনি চলে আসেন। প্রায় চার দিন পর দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, ‘আমি উপোস রয়েছি, আমার পুজো হয়নি। তুই কি চাস’? তখন তিনি বলেছিলেন এখানে নরবলি বন্ধ করতে হবে। তখন থেকেই বন্ধ হয়ে যায় নরবলি। এখন ছাগ বলি প্রথা চালু রয়েছে। প্রতিদিনই চলে মায়ের নিত্য সেবা। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এখানে পুজো দিতে। কালীপুজোর দিন বিশেষ পুজো পাঠের ব্যবস্থা করা হয়। ১০৮ রকমের ভোগ নিবেদন করা হয় মাকে। তবে মা পছন্দ করেন সন্দেশ। বলি প্রথা থাকলেও মাছ দিয়ে ভোগ দেওয়া হয় মাকে। প্রতিবছর দূর দূরান্ত থেকে ভক্তের সমাগম ঘটে মন্দির চত্বরে। মনস্কামনা পূরণের জন্য অনেকেই মন্দির সংলগ্ন একটি গাছে ইটের টুকরো বেঁধে দিয়ে যান।

advertisement

আরও পড়ুনঃ মায়ের ভোগে খয়রা মাছ! বিথারীর জাগ্রত খয়রা কালীর কৃপায় মহামারি নির্মূল, সাতশো বছরের প্রাচীন পুজোর অলৌকিক কাহিনি জানুন

যদিও কালের নিয়মে পাল্টেছে সব। মন্দিরও বেরেছে পরিসরে এবং বহরে। তালপাতায় ঘেরা মন্দির পাকা ও স্থায়ী হয়েছে। মৃন্ময়ী মূর্তি পরিবর্তিত হয়ে কষ্টি পাথরের মূর্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কালী মন্দিরে। একসময় এই মন্দিরের চারপাশে ছিল না কোন দোকান। বর্ধমান থেকে আগত ট্রাকচালকরা তারা মায়ের পুজোর জন্য নিয়ে আসতেন মিহিদানা, সীতাভোগ। বর্তমানে মায়ের মন্দিরের সামনে গড়ে উঠেছে অনেক দোকান। সেই দোকানে সন্দেশ ও দানাদার দিয়ে মাকে পুজো দেন সকলে।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত অনামিক চ্যাটার্জি বলেন, কত বছর আগে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল তা অনেকেরই অজানা। এখানকার মা খুব জাগ্রত। জিটি রোডের দিয়ে যাবার সময় প্রত্যেকটি গাড়ির ড্রাইভার তারা মায়ের কাছে পুজো না দিয়ে যান না। কালীপুজোর দিন বিভিন্ন রকম ফল দিয়ে মাকে পুজো দেওয়া হয়। তবে মা সন্দেশ খেতে খুব ভালবাসেন। তাই পুজোতে সন্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া মায়ের ভোগে পোনা মাছ দেওয়া হয়। ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাবার সময় মাকে পুজো দিয়ে যেত। ডাকাতিদের সফল না হলে ফিরে এসে মায়ের মন্দির ও মাকে ভেঙে দিয়ে যেত। পরদিন মিস্ত্রিদের স্বপ্ন দিয়ে ফের তৈরি করা হতো মন্দির। মাকে মন থেকে ডাকলে সাড়া পাওয়া যায়। মনস্কামনাও পূরণ হয় বলে বছর বছর পুজো দিতে আসেন ভক্তরা।

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Simlagarh Kali Mandir: মায়ের সামনে নরবলি! ভোগে মাছের কালিয়া-সহ ১০৮ রকম পদ, সিমলাগড়ের দক্ষিণা কালী ভক্তদের মনস্কামনা অপূর্ণ রাখেন না
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল