গরমের ছুটির পর স্কুল খুলতেই দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু ছাত্রী আর স্কুলে আসছে না। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, আঠারো বছর বয়স হওয়ার আগেই তাদের কারোর কারোর বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে পরিবার। সেই বাল্য বিবাহ রুখতে তৎপর হল স্কুল।
advertisement
এলাকায় মূলত সংখ্যালঘু ও তপশিলি জাতি উপজাতির বাসিন্দাদের বসবাস। এই এলাকায় মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেশি। বাল্য বিবাহ রুখতে তাই তৎপর হল স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকদের সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি গেলেন শিক্ষকরা। সঙ্গে ছিলেন মৌলবী, পুরোহিত, পঞ্চায়েত প্রধানরাও।
স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ঘরের কাছে স্কুল থাকা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক ছাত্রী। তাছাড়া মাঝপথে স্কুল ছেড়ে দেওয়ায় কন্যাশ্রী, রূপশ্রী-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। তাই অভিভাবকরা যাতে মেয়েদের ফের স্কুলে পাঠায় তার আবেদন জানানো হল। সেই সঙ্গে উচ্চশিক্ষা না দেওয়ার বদলে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিলে পরবর্তী সময়ে তাদের কোন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে সে ব্যাপারেও অভিভাবকদের সচেতন করা হয়েছে।
স্কুলের এই অভিযানে মত বদল করেছেন অনেক অভিভাবক। আগামীকাল থেকে ফের মেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমাদের স্কুলে গড়ে চোদ্দশো পড়ুয়া থাকে। ইদানিং তা কিছুটা কমছে বলে আমাদের নজরে আসে। তার মধ্যে কয়েক জন ছাত্রীর বিয়ের প্রস্তুতি চলছে বলে আমরা খবর পাই। এরপরই আমরা স্কুল পরিচালন কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা করি। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল স্কুল ছুট ঠেকাতে ও বাল্য বিবাহ রোধে বাড়ি বাড়ি যাওয়া হবে। কয়েকদিন আগেই স্কুল ছুটির আটকাতে পাঁচটি দলে ভাগ হয়ে আটটি গ্রামে গিয়েছিলেন শিক্ষকরা। সেই অভিযানে পড়ুয়াদেরও সামিল করা হয়েছিল। এবার মৌলবি, পুরোহিত, পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের নিয়ে বাল্য বিবাহ ঠেকাতে বাড়ি বাড়ি অভিযান করলেন শিক্ষকরা।