১৯৭০ সালের ১৭ মার্চ সাতসকালে সিপিএমের হাতে নিহত হয়েছিলেন সাঁইবাড়ির দুই ছেলে মলয় সাঁই, প্রণব সাঁই ও বাড়ির গৃহশিক্ষক জীতেন রায়। প্রতিবছরই এই দিনটিকে স্মরণ করে আসছেন জেলার কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। ২০১১ সাল থেকেই কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ববৃন্দরা সাইঁবাড়ি দিবস পালন করে আসছেন।
একদিকে বর্ধমান শহরের প্রতাপেশ্বর শিবতলা লেনে সাঁইবাড়ির শহিদবেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য দেবার পাশাপাশি জেলা কংগ্রেস ভবনেও পৃথকভাবে এই দিনটিকে পালন করে আসতেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। কিন্তু এবারেই সেই ধারায় ছেদ পড়ল। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এবার যেমন শহিদ দিবসে শহিদবেদীতে মাল্যদান করা হয়নি। ঠিক তেমনই কংগ্রেসের জেলা অফিসেও দিনটি পালন করা হয়নি বলে আক্ষেপ করেন সাঁইবাড়ির পুত্রবধূ তথা বর্ধমান পৌরসভার ৩৪ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তণ তৃণমূল কাউন্সিলার উমা সাঁই। তাঁর অভিযোগ, "এতদিন কংগ্রেস যাঁদের সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের দোষী মানত, যাঁদের হাতে রক্তাক্ত হয়েছিল সাঁইবাড়ি, সেই সিপিএমের সঙ্গেই জোট বেঁধেছে কংগ্রেস। তাই তাঁরা সাঁইবাড়ি ভুলে যাবে৷ এটাই স্বাভাবিক৷" পাশাপাশি একই অভিযোগ করেছেন পূর্ববর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা বিদায়ী মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
advertisement
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের মধ্যেও তৈরি হয়েছে মতবিরোধ।কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তণ জেলা সাধারণ সম্পাদক কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন তিনি ব্যক্তিগতভাবে অসুস্থ।তাই ইচ্ছা থাকলেও তিনি যেতে পারেননি।যদিও কংগ্রেসের না যাওয়াকে তিনি মেনে নিতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন গতবারও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে শহিদবেদীতে মাল্যদানের পাশাপাশি কংগ্রেস অফিসেও যথাযোগ্য মর্যাদায় সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ড দিবস পালন করা হয়েছিলো।কিন্তু এবার তা না হওয়ায় স্বভাবতই তিনি মর্মাহত।
অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিজিত ভট্টাচার্য্য অবশ্য দাবি করেছেন, ঘটা করে নয় কংগ্রেস ভবনের ভেতর তাঁরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। সাঁইবাড়ির পক্ষ থেকে তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সাঁইবাড়ির বর্তমান সদস্যদের সিংহভাগই বর্তমানে তৃণমূলের আশ্রিত। নানান সুযোগ সুবিধাও পেয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে ১০ বছর। ঘটা করে সাঁইবাড়ি নিয়ে কমিশন গঠন করেছিল। কিন্তু তার ফলাফল এখনও জানাতে পারেনি।
বুধবারই তেলমারুইপাড়ায় সাঁইবাড়ির শহিদবেদীতে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এক ঝাঁক তৃণমূল নেতা। এদিন দুপুরে এসে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান বিদায়ী মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তাঁর সঙ্গে হাজির ছিলেন বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী নিশীথ মালিক,জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাসবিহারী হালদার সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ববৃন্দরা।
(শরদিন্দু ঘোষ)