কয়েকদিন আগের ঘটনা। সুন্দরবনে নদী পেরোনোর সময় মৎস্যজীবীদের হামলার মুখে পড়ে রয়েল বেঙ্গল। ট্রলার থেকেই ডোরাকাটাকে বাঁশ দিয়ে মারার চেষ্টা করেন মৎস্যজীবীরা।
সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই প্রকাশ্যে অত্যাচারের নতুন ছবি। এবারের ঘটনাস্থল, বীরভূমের পাড়ুই। শনিবার সকালে লাগোয়া জঙ্গলে পিপীলিকাভুকটিকে দেখতে পান গ্রামের মানুষ। আনকোরা জানোয়ার ভেবে ধরে আনেন গ্রামে। এরপরই শুরু হয় অত্যাচার।
advertisement
একের পর এক বন্যপ্রাণের উপর মানুষের হামলায় উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা।
ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সদস্য দীনবন্ধু বিশ্বাস বলেন, ‘‘মানুষকে বারবার সচেতন করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষ বুঝছেন না। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায় কিনা, দেখব।’’
আরও পড়ুন: ভূত ঢুকেছে বলে অসুস্থকে মার, ওঝার ঝাড়ফুঁকে মৃত্যু যুবকের
বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুণ্ডু টেলিফোনে নিউজ এইটিন বাংলাকে জানান, ‘‘মানুষের মধ্যে সহনশীলতা কমছে। আরও সচেতনতা দরকার। বন দফতর ও আমাদের আরও সক্রিয় হতে হবে।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাড়ুইয়ের মানুষ আগে প্যাঙ্গোলিন দেখেননি। হয়তো সেই কারণেই অত্যুৎসাহীদের এমন আচরণ। কী এই পিপীলিকাভুক?
প্যাঙ্গোলিনের প্রচলিত নাম বনরুই ৷
-- অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির এই প্রাণী পতঙ্গভুক
-- পিঁপড়ে, উইপোকা প্রভৃতি এর খাদ্য
-- ওষুধ তৈরির জন্য প্যাঙ্গোলিনের আঁশ সহ শরীরের নানা অংশ ব্যবহৃত হয়
-- চোরাশিকারিদের অত্যাচারে ক্রমশ বিলুপ্তির মুখে এই প্রাণী
আরও পড়ুন: দু’বছর পর বিধাননগর কঙ্কাল কাণ্ডের রহস্যের সমাধান ! গ্রেফতার অভিযুক্ত
প্রাক্তন প্রধান মুখ্য বনপাল অতনু রাহা বলছেন, ‘‘নিরীহ প্রাণী এরা। এদের উপর অত্যাচারের কোনও কারণ নেই। অত্যাচারে মারাও যেতে পারে এরা।’’
জঙ্গল থেকে প্যাঙ্গোলিনটি ধরা পড়ার পরই খবর যায় পাড়ুই থানায়। বন দফতরকে বিষয়টি জানায় পুলিশ। বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাণীটিকে উদ্ধার করেন। শরীরে একাধিক আঘাত থাকায় সিউড়ির প্রাণী হাসপাতালে তার চিকিৎসার পর জঙ্গলে ছাড়া হয় রবিবার ভোরে।