বেলা গড়িয়ে সন্ধে নামে। ম্লান হয়ে আসে সূর্যের আলো। ক্লান্তি নামে না তাঁর দু’চোখে। প্রাণশক্তির আলোকছটায় আঁধো আলো ছায়া মাখা কারখানাটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। খড় কাঠামোয় মাটির পরত লাগে। রক্তমাংসের দূর্গার হাতে প্রাণ পান মহিষাসুর মর্দিনী। তাল তাল কাদামাটি ডলে মচড়ে বাগে এনে ফেলেন বিরাট অসুরকে। মায়ের কেশরাশি পাটে পাটে সাজাতেও সমান নিপুণ তিনি।
advertisement
বর্ধমানের বাদামতলার পূর্ণিমা পালের দু’হাতে এবার তৈরি হয়েছে ১৮টি দশহাতের গল্প। প্রতিমাশিল্পী স্বামীর পাশে দাঁড়াতেই এগিয়ে এসেছিলেন। অনটনের সংসারে শ্রমিক রাখার সামর্থও ছিল না। তাই প্রতিমা তৈরির বরাত মিললেও সময়ে শেষ করতে না রায় ফসকে যেত সুযোগ। সংসার, রান্নাবান্না সামলে বারো বছর পর প্রতিমা তৈরির সমস্ত কাজ তাঁর নখদর্পণে।
প্রথমদিকে আপত্তি জানিয়েছিলেন স্বামী। অনটনের অসুর বধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন পূর্ণিমা। এখন পূর্ণিমার সাফল্যে গর্বিত স্বামীও।
পূর্ণিমার হাতের যাদুতেই সিংহের দু’চোখে ফুটে ওঠে হুংকার-গর্জন। ঘুপচি কারখানায় গর্জে ওঠেন দশভূজাও। শব্দে নয়। প্রতিভায় আর সৃষ্টিতে।