বর্তমানে বিলুপ্তির পথে হলেও, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই পুতুল বানিয়ে চলেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকের খড়ুই পশ্চিম সাই গ্রামের চন্দ পরিবার। এই পরিবারেরই বৃন্দাবন চন্দ গত ৫০ বছর ধরে এই গালার পুতুল তৈরি করে আসছেন। ছোটবেলায় বাবার কাছেই তিনি শিখেছিলেন এই পুতুল তৈরির সূক্ষ্ম কৌশল। কিন্তু এখন আর আগের মতো চাহিদা নেই, তাই এই শিল্পের মাধ্যমে সংসার চালানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে তাঁর। তবুও শিল্পের প্রতি ভালবাসা থেকেই তিনি এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। বৃন্দাবনের হাতে তৈরি পুতুল একবার উপহার হিসেবে পৌঁছেছিল খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে। ছোট্ট গণেশের সূক্ষ্ম কারুকার্য দেখে প্রধানমন্ত্রীও প্রশংসা করেছিলেন তাঁর শিল্পকর্মের।
advertisement
বর্তমানে রকমারি আধুনিক খেলনার বাজারে গালার পুতুলের কদর আগের মত না থাকলেও, এখনও অনেক মানুষের কাছে এই পুতুলই প্রথম পছন্দ। সেই মানুষদের কথা ভেবেই বৃন্দাবন আজও মন দিয়ে তৈরি করে চলেছেন এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প। তাঁর হাতে গড়া পুতুল আজ বিক্রি হচ্ছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি দেশের বাইরে পর্যন্ত পৌঁছেছে তার খ্যাতি। ঘর সাজাতে এই সৌখিন পুতুলের জুড়ি মেলা ভার—একবার দেখলেই বোঝা যায়, এতে কত যত্ন, সময় ও ভালবাসা মেশান। দিল্লি থেকে মুম্বই—ভারতের নানা শহরে তিনি নিজের এই পুতুল নিয়ে ওয়ার্কশপও করেছেন, যাতে নতুন প্রজন্ম আবার এই হারিয়ে যাওয়া শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন-নামের শুরুতেই ‘A’ রয়েছে? আছে প্রচুর গুণ, দোষও কম নয়, সৎ না অসৎ! জানুন কেমন হয় এদের চরিত্র?
বৃন্দাবনের কথায়, এই পুতুল পোড়ামাটির তৈরি, সহজে ভেঙে যায় না। গালাল রংও জলে ধুলে উঠে যায় না, তাই দীর্ঘদিন টিকে থাকে তার উজ্জ্বল রূপ। প্রতিদিনই তিনি বানিয়ে চলেছেন নানা আকৃতির দেব-দেবীর মূর্তি, বাঘ-হরিণ, ঘোড়া-ষাঁড় থেকে শুরু করে নানান ধরনের পুতুল। তাঁর হাতে গড়া প্রতিটি শিল্পকর্মে যেন প্রাণ আছে—দেখলে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। আর দাম? সেটাও খুব বেশি নয়। মাত্র ১০০ টাকা থেকে শুরু এই গালার পুতুল। তাই ঘর সাজাতে বা প্রিয়জনকে উপহার দিতে চাইলে এই ঐতিহ্যবাহী পুতুলের বিকল্প নেই বললেই চলে।





