#হাওড়া: প্রশাসনের পর এবার বৈঠকে পুলকের সংগঠন | পুলকার মালিক ও চালকদের নিয়ে হাওড়ায় বৈঠক করলো হাওড়া জেলা পুলকার সংগঠন | সাম্প্রতিক কালে পুলকার নিয়ে রাজ্য প্রশাসন ও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের যে নির্দেশ বা নিয়ম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয় |
আলোচনার মূল যে বিষয় উঠে আসে তা হল প্রশাসনের দেওয়া সব নিয়ম মেনেই পুলকার চালাবে সমস্ত পুলকার চালক ৷ তবে সেই সব নিয়ম লাগু করতে সময় লাগবে কিছুদিন, তাই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সমস্ত নিয়মকানুন মেনে পুলকার চালানোর জন্য হাওড়া পুলিস কমিশনারেটের কাছে মাস ছ’য়েক সময় চাইবে পুলকার অ্যাসোসিয়েশন। এই সময়ের মধ্যে তাঁরা পুলকারের চালকদের যেমন বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে, তেমনি ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে চাইবে তাঁরা। কারণ যাবতীয় নিয়মকানুন মেনে পুলকার চালাতে গেলে যা যা করতে হবে, তাতে বর্তমান ভাড়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে দাবি তাঁদের।
advertisement
সূত্রের খবর, আগামী এক-দু’দিনের মধ্যে পুলিশের কাছে লিখিতভাবে এই আবেদন করতে চায় তাঁরা। যদিও পোলবার ঘটনা এবং স্কুল ছাত্র ঋষভের মৃত্যুর পর এই ব্যপারে পুলিশ কোনও শিথিলতা দেখাবে না বলে জানা গিয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের যে নির্দেশিকাগুলি রয়েছে, তা সবক’টাই আমরা মেনে চলতে চাই। কিন্তু আমাদের সীমাবদ্ধতা ও সমস্যাগুলির দিকে নজর দেওয়ার আবেদন জানাব প্রশাসনের কাছে। তিনি বলেন, ‘‘তিন কিলোমিটার দূরত্বের জন্য আমরা হাওড়াতে একজন পিছু মাসে প্রায় ৮০০ টাকা নিই। সব নিয়মের মধ্যে রয়েছে গাড়িকে নির্দিষ্ট রঙ করা, কমার্সিয়াল গাড়ির অনুমোদন নেওয়া এবং বিমা করা, স্পিড গভর্নর লাগানো-সহ বেশ কিছু খরচসাপেক্ষ বিষয়। পুলকার হিসেবে ব্যবহার ছাড়া অন্য কোনও কাজেই ওই গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না। ফলে স্কুলের সময় বাদ দিলে গাড়িটি স্রেফ বসে থাকবে। এই দিকগুলি মেনে চলতে গেলে জনপ্রতি ভাড়া প্রায় দ্বি গুনের কাছাকাছি বৃদ্ধি পাবে | এই সব বিষয় বিবেচনার জন্য আমরা কিছুটা সময় চাইব। এর মধ্যে আমরা অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলব।’’
এ বিষয়ে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (ট্রাফিক) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশাবলী তো আর আজকের ব্যাপার নয়। অনেকদিন আগেই তা সবাই জেনে গিয়েছেন। তিনি বলেন, আবেদন জানালে জানাতে পারেন কেউ। তবে এ বিষয়ে সরকারের যে স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে, তা মেনে চলা হবে। হুগলির পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনার পর সারা রাজ্য জুড়েই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হয়। নানা জায়গায় নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন পুলকার চালানোর অভিযোগ সামনে আসে। পুলিশ-প্রশাসনের গাফিলতি বা উদাসীনতার প্রসঙ্গও উঠে আসে নানা ক্ষেত্রে। এই পরিস্থিতিতে হাওড়া পুলিশের উদ্যোগে দাশনগর, গোলাবাড়ি ট্রাফিক গার্ডের উদ্যোগে ইতিমধ্যে মালিক ও চালকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, দৃশ্য-শ্রাব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশাবলী বোঝানো এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য শিবির করা হয়। বেআইনিভাবে পুলকার চালাতে দেওয়া হবে না বলে সেই শিবিরগুলিতে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় চালক ও মালিকপক্ষকে।
অবিভাবকদের দাবি, পুলকার সংগঠন নিয়মের বেড়াজাল দেখিয়ে অধিক অর্থ উপার্জনের ফন্দি আটছে, তবে ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে যদি সামান্য কিছু অর্থ বেশি ব্যয় করতে হয় সেক্ষেত্রে পুলকার সংগঠনের পাশেই দাঁড়াবেন তাঁরা ৷ তবে এই অজুহাতে অধিক টাকা বৃদ্ধি করলে তাঁরাও এবার আন্দোলনে নামবেন |