অধীর চৌধুরী বলেন, ‘গত ২৪ বছর ধরে এই রেলব্রিজ তৈরির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রেলদফতর, রেল দফতরের মন্ত্রীর কাছে বারবার আবেদন করেছি দ্রুত কাজ শেষ করার। অবশেষে সেই কাজ শেষ হয়েছে। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি ছাড়পত্র দিয়েছে এবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে যাবে। জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হল।”
বর্তমানে হাওড়া থেকে আজিমগঞ্জ হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব ৫৬৭ কিমি। শিয়ালদহ থেকে ভায়া আজিমগঞ্জ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব ৫৭৪ কিমি এবং হাওড়া থেকে ভায়া বোলপুর, রামপুরহাট নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব ৫৭৩ কিলোমিটার। নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতু চালু হলে শিয়ালদহ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব কমে হবে ৫৫৩ কিমি। রেল সূত্রে খবর, মোটের উপর দূরত্ব কমবে ২১ কিমি।
advertisement
বহু দূরপাল্লার দ্রুতগামী ট্রেন বর্ধমান, আসানসোল হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলেছে প্রতিদিন। কয়েক বছর আগেই আসানসোলের কয়লাখনি অঞ্চলে লাল সঙ্কেত জারি করা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে পূর্ব রেলের আরও একটি বিকল্প পথ খুলে যাচ্ছে। যদিও এই পথে ফরাক্কা হয়ে নয়াদিল্লি যেতে প্রায় ২৫০ কিমি অতিরিক্ত পথ অতিক্রম করতে হবে। লালুপ্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে নসিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতুর আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস করেন। সেই সময় এই সেতু নির্মাণের জন্য রেলমন্ত্রক থেকে ৪৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০১০ সালে সেটি চালু হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু জমি নিয়ে জটিলতায় এক যুগ ধরে সেতু নির্মাণের কাজ থমকে ছিল। নশিপুর রেল সেতু বা নশিপুর – আজিমগঞ্জ রেল সেতু পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভাগীরথী নদী অতিক্রম করে মুর্শিদাবাদ রেলস্টেশন এবং আজিমগঞ্জ জংশন রেলওয়ে স্টেশন কে সংযুক্ত করে।
ব্রিটিশ শাসনকালে এই সেতুটি ৭৮৫ মিটার দীর্ঘ ছিল। কিন্তু পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তা ভেঙে দেওয়া হয়। মুর্শিদাবাদ বা নদিয়া জেলার মানুষকে উত্তর ভারতে যেতে হাওড়া বা শিয়ালদহ হয়ে যেতে হয়। লালবাগের সঙ্গে আজিমগঞ্জের নশিপুরের ব্রিজের সংযোগ স্থাপন হলে খুব সহজেই ফরাক্কা হয়ে পটনা দিয়ে উত্তর ভারতে রেলপথ ব্যবহার করে যাওয়া যাবে।