রাজ্যের প্রসিদ্ধ শিব মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম বর্ধমানের আলমগঞ্জের এই বর্ধমানেশ্বর শিব মন্দির। বিশাল আকারের কারণে এই শিব ‘মোটা শিব’ বা ‘বুড়ো শিব’ নামেও পরিচিত। ১৯৭২ সালে এলাকায় পুকুর খোঁড়ার জন্য মাটি কাটার কাজ চলছিল। সেই সময় হঠাৎই পাথরের গায়ে আঘাত লাগে গাঁইতির। কৌতুহল বাড়ে শ্রমিকদের। ধীরে ধীরে খোঁড়া হয় আশপাশ। তখনই মাটির নীচ থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসে বিশালাকার গৌরিপট্ট-সহ এই শিবলিঙ্গ। পরে ক্রেনে করে তুলে পাশে স্থাপন করা হয় শিবলিঙ্গটিকে। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে এই প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়।
advertisement
মন্দিরের ঠিক পাশেই রয়েছে দুধপুকুর। সেই পুকুরে স্নান সেরে পুজো দেন ভক্তেরা। শ্রাবণ মাসে পাওয়া গিয়েছিল শিবলিঙ্গটিকে, তাই সেই মাসেই এই শিবের আবির্ভাব দিবস পালন করা হয়। এ দিন হাজার হাজার পুণ্যার্থী গঙ্গা থেকে বাঁকে করে জল এনে শিবের মাথায় ঢাললেন। মন্দিরের বাইরে জল ঢালার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পাইপ দিয়ে সেই জল পৌঁছেছে শিবলিঙ্গে। মূল মন্দিরে ভিড়ের চাপ কমাতেই এই ব্যবস্হা।
এই শিবলিঙ্গের প্রাচীনত্ব নিয়ে ইতিহাসবিদদের মনে কোনও দ্বিমত নেই। তবে ঠিক কত বছরের প্রাচীন তা নিয়ে প্রামাণ্য কোনও তথ্য পাওয়া যায় না। অনেকের মতে, এই শিবলিঙ্গ কণিষ্কের সময়ে। অর্থাৎ প্রায় ১৬০০ -১৭০০ বছর আগের। কণিষ্ক নিজে এই কালো শিবলিঙ্গে নিয়মিত পুজো করতেন বলেও মনে করেন অনেকে। পরবর্তী সময়ে বন্যায় তা দামোদরে ভেসে আসে। তবে এত ভারী শিবলিঙ্গের পক্ষে নদীতে ভেসে আসার সম্ভাবনা নিয়েও ইতিহাসবিদদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। সে যাই হোক, সাধের বর্ধমানেশ্বরকে নিয়ে গর্বিত বর্ধমানবাসী। শিবলিঙ্গের উচ্চতা প্রায় ছয় ফুট। ওজন ১৩ টনেরও বেশি। গোটাটাই একটিই কালো পাথর নিপুণভাবে কেটে তৈরি।