পূর্ব বর্ধমান জেলাজুড়ে ধানে শোষক পোকার হানা দিয়েছে। মাথায় হাত চাষিদের। এই পরিস্থিতিতে চাষিদের সহায়তা দিতে মাঠে নেমেছে কৃষি দফতরও। এই পরিস্থিতিতে চাষিদের কী করণীয় তা জানাতে ব্লকে-ব্লকে প্রচার শুরু হয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এখনও ঠিকভাবে শীত না পড়ায় বাদামি শোষকের প্রকোপ বেশি দেখা দিয়েছে। গত বছরও এই রোগের হানায় ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন কৃষকরা। গত বছর জেলায় মোট ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে রোগ-পোকার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। এবার ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার হেক্টরে আমন ধান চাষ হয়েছে। জেলা শাসকের কাছে কৃষি দফতরের জমা দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এ'পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার হেক্টরে শোষকের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যা গত বারের প্রায় অর্ধেক। এই পোকা ধান গাছের গোড়ায় হানা দেয়। ধান গাছে রস শুষে খেয়ে নেয়। এই পোকার আক্রমণে ধান গাছ ধীরে ধীরে ঝলসে যায়। ফলন মার খায়।
advertisement
কৃষি দফতরের তরফে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, জমির কোনও অংশে তিনটি গুছিতে ১০টির বেশি পোকা থাকলেই ব্যবস্থা নিতে হবে। কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি, জমির জল বের করে দিয়ে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে ধানগাছ ঠেলা দিয়ে ফাঁক করে দিতে হবে। যাতে ভালভাবে আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে। রোগ পোকার আক্রমণ বেশি হলে বিশেষ কীটনাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি আধিকারিকরা। ধান উৎপাদন হয় এমন প্রতিটি ব্লকেই ধারাবাহিকভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল জানান, '' চাষিদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্লকে ব্লকে প্রচার চালানো হচ্ছে। জমির ধান ৮০ শতাংশ পেকে গেলে তা কেটে খামারজাত করতে বলা হচ্ছে চাষিদের। এর ফলে শোষকের হানা হলেও সেভাবে ক্ষতি করতে পারবে না বলে জানাচ্ছে কৃষি দফতর। পাকা ধান জমিতে রেখে দিলে শোষক পোকা তা নষ্ট করে দেবে। তাই দ্রুত পাকা ধান কেটে খামারে তুলে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি দফতর।''