লক ডাউন পর্ব কাটিয়ে পনেরো দিন হল তাঁর অফিস খুলে গিয়েছে। ট্রেন চলছে না। বর্ধমান-ধর্মতলা রুটের সরকারি বাসই তাঁর ভরসা। অফিস জানিয়ে দিয়েছে, সোমবার থেকে সময়ে পৌঁছতে না পারলে বেতন কাটা যাবে।বাড়িতে মা, ভাই, স্ত্রী,ছেলে। সংসার চালাতে তাঁর বেতনই মূল ভরসা। বাস না মেলায় মোটর সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে শেহরাবাজার হয়ে বর্ধমান উল্লাস বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে পৌঁছেছেন সকাল সকাল। কিন্তু সেখানে কলকাতা যাওয়ার সরকারি বাস অপ্রতুল। সাড়ে দশটার বাসের টিকিট পেয়েছেন।
advertisement
দুঃশ্চিন্তায় পায়চারি করছিলেন সরকারি বাসের টিকিট কাউন্টারের সামনে। বললেন, 'পৌঁছতেই সাড়ে বারোটা একটা বেজে যাবে। বেতন তো কাটা যাবেই। তারপর ফিরবো কী ভাবে তাও ভাবতে হচ্ছে। সরকারি বাসের সংখ্যা না-বাড়লে আমাদের মতো যাত্রীদের খুবই সমস্যায় পড়তে হবে।'
এমনিতেই বর্ধমান থেকে কলকাতা সরকারি বাসে যাতায়াত মানেই বাড়তি খরচ বহন করা। লোকাল ট্রেন বা মান্থলি থাকলে যা খরচ হয় সরকারি বাসে যাতায়াতে তার দ্বিগুণ খরচ। কিন্তু বিকল্প কোনও উপায় না থাকায় এভাবেই যাতায়াত করতে হচ্ছে প্রণববাবুর মতো অনেককেই। চাকরি বাঁচাতে বাড়তি খরচ করতেই হচ্ছে। কিন্তু তাতেও পথে বেরিয়ে যানবাহনের অভাবে চূড়ান্ত হয়রান হতে হচ্ছে অনেককেই।
বর্ধমান থেকে কলকাতা সরাসরি সরকারি বাস যায়। দুটি রুট রয়েছে। বর্ধমান ধর্মতলা ও বর্ধমান করুণাময়ী। বর্ধমানের আলিশা বাস স্ট্যান্ডের সরকারি বাসের টিকিট কাউন্টারের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সোমবার থেকে এই দুই রুটে বাস বেড়েছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় কম। আগে এই দুই রুটে পঞ্চাশটি বাস যাওয়া আসা করতো। এখন যাতায়াত করছে তার অর্ধেক। তার মধ্যে বর্ধমান ধর্মতলা রুটে বাস চলছে বেশি। তাঁরা জানালেন, বেশ কয়েকটি বাস পরিযায়ী শ্রমিকদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কাজে যুক্ত রয়েছে। সেজন্য এই দুই রুটে বেশ কিছু বাস নামতে পারেনি। সেই বাসগুলি না আসা পর্যন্ত যাত্রীদের সমস্যা থাকবে।
SARADINDU GHOSH