#বর্ধমান: ফলস সিলিংয়ের ঠিক ওপরেই থাকে ধাতব চ্যানেল। সেই চ্যানেল ধরে থাকে ফলস সিলিং। ঠিক নিচেই থাকে জিপসাম বোর্ড বা ফলস সিলিং। বর্ধমান স্টেশনের মূল প্রবেশদ্বারের বাইরের পোর্টিকোর ফলস সিলিং লাগানো হয়েছিল এ ভাবেই। ফলস সিলিংয়ে ধাতব চ্যানেল পাতা থাকে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত। বৃষ্টি পড়লেই সেই চ্যানেলে জল চলে আসছে। সেই জল চ্যানেল মারফত ছড়িয়ে পড়ছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। জলের সংস্পর্শে এসে ফুলে ফেঁপে ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছে জিপসাম বোর্ড। তার পরিণতিতেই সেই বোর্ড খসে পড়ছে। তেমনই এক ঘটনায় রবিবার বর্ধমান রেল স্টেশনে আহত হলেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। শহরের বাসিন্দাদের প্রশ্ন, বৃষ্টি হলে চ্যানেল দিয়ে জল ঢুকে ফলস সিলিং নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কা রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের মাথায় এল না কেন?
advertisement
রবিবারের ঘটনা জেরে যাত্রী থেকে শুরু করে বর্ধমানের বাসিন্দা সকলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। বারবার এই স্টেশনে দুর্ঘটনা ঘটায় যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। রেলের নজরদারি ও গাফিলতি দেখে তাঁরা উদ্বিগ্ন, বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তাঁরা বলছেন, বৃষ্টি হলে যে ফলস সিলিং নষ্ট হয়ে যাবে তা রেলের ইঞ্জিনিয়াররা আগাম বুঝতে পারলেন না কেন? ভাবনা চিন্তা না করেই লক্ষ লক্ষ টাকা সংস্কারের নামে খরচ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অনেকেই। ভেঙে পড়া অংশের কাছে গিয়ে দেখা গিয়েছে ফলস সিলিংয়ের ধাতবচ্যানেল জলে ভর্তি হয়ে রয়েছে। সেই জল আটকানোর কোনও ব্যবস্থা না করেই রেল ঠিকাদার সংস্থাকে তাপ্পি মেরে ফাটল বন্ধ করার বরাত দিয়ে দেয়। রবিবার বিকেলের আগেই চার জায়গায় তাপ্পি মারার কাজও সম্পূর্ণ হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পরিণতিতে আবারও ভেঙে পড়বে ফলস সিলিং। কারণ, চ্যানেল দিয়ে জল যাওয়া অব্যাহত থাকবে সেই জলের সংস্পর্শে এলেই জিপসাম বোর্ড নষ্ট হয়ে ভেঙে পড়বে। তাই জল আটকানোর কোনও ব্যবস্থা না করে কেন তড়িঘড়ি সারাইয়ের কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
মেরামতির কাজে যুক্ত বেসরকারি সংস্থার কর্মীরাও বললেন, জিপসাম বোর্ডের মূল শত্রু হল জল। জলের সংস্পর্শে এলেই তা নষ্ট হয়ে খসে পড়বে। এক্ষেত্রেও তেমনটি হয়েছে। সেই জল আসা না আটকে কেন তড়িঘড়ি তাপ্পি মারা হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা জানান, দ্রুত ফাটল মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে কাজ চলছে । এ ব্যাপারে আমাদের আর কিছু বলার নেই। বর্ধমান রেল স্টেশনের রেলের আধিকারিকরাও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।