উঁচু ভিত্তিবেদির উপর মন্দিরটি অবস্থিত। আনুমানিক হাজার বছরের আগে নির্মিত হয়েছিল বলেই গবেষকদের দাবি। মন্দিরের স্থাপত্যটি বেশ আকর্ষণীয়। প্যাগোডার আদলের মন্দিরটির প্রাচীনত্বের নানা ছাপ। প্রবেশপথের সামনে কষ্টিপাথরে নির্মিত বৃষভ মূর্তিটি ভাস্কর্যের দিক থেকে মূল্যবান। মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে অগাধ কিংবদন্তি। প্রাচীন মন্দিরের গঠনশৈলী আপনাকে মুগ্ধ করবে। বিশাল আকার জায়গা জুড়ে থাকা সহস্ত্র বছর পুরানো এই মন্দিরে এলে আলাদাই প্রশান্তি মিলবে। মন্দিরের প্রতিষ্ঠালিপি না থাকায়, মন্দিরটির প্রতিষ্ঠা কে করেছিলেন, তা সঠিক জানা যায় না। জানা যায় না প্রতিষ্ঠার সময়কালও। গবেষকদের দাবি সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল।
advertisement
অন্যদের অভিমত, ওড়িশার সূর্যবংশীয় নৃপতি গজপতি মুকুন্দদেব (শাসনকাল ১৫৫৯ – ১৫৬৮) ষোড়শ শতাব্দীর শেষার্ধে মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। মন্দিরের চারপাশ মাকড়া পাথরের প্রায় দশ ফুটের উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। ভেতরের অঙ্গনটির আয়তন ১৩,৮৮৩ বর্গফুট। তার ভিতর ফুট চারেক উঁচু ভিত্তির উপর মন্দিরটি স্থাপিত। ওড়িশী পীঢ়-রীতির আদলে তৈরি মন্দির। মন্দিরের অলঙ্করণ হিসাবে দেখা যায় মূল প্রবেশপথের সামনে একটি নন্দীমূর্তি। ইতিহাসবিদদের মতে, কালাপাহাড়ের আঘাতে ভগ্ন এই নন্দী মূর্তি। মন্দিরের উত্তরদিকে পাথরে খোদিত একটি মকরমূর্তি আছে। সামনের দ্বারপথের মাথায় ভগবান বিষ্ণুর অনন্তশয্যা ফলক আছে। এই মন্দিরে প্রতিদিন বহু ভক্ত ভিড় জমান। তবে বছরে বেশ কিছু পালনীয় দিনে বেশি ভিড় হয়।
প্রতিদিন চলে পুজো পাঠ। শ্রাবণের সোমবারেও বেশ ভিড় হয় শ্যামলেশ্বর মন্দিরে।তবে মন্দির ঘিরে রয়েছে নানান অজানা ইতিহাস। বাংলা ওড়িশা সীমানায় পাঠানদের আক্রমণে কালাপাহাড় একাধিক দেব দেবীর মন্দিরে আক্রমণ চালায়। কালাপাহাড়ের আক্রমণে ভেঙে যায় মন্দিরের সামনে থাকা বৃষভ মূর্তির একাংশ। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল সম্পর্কে এ পর্যন্ত কোন তথ্য না পাওয়া গেলেও মন্দিরের প্রাচীনত্ব ভক্তদের বেশি করে আকৃষ্ট করে। শুধু তাই নয় ভক্তি এবং বিশ্বাসে ধীরে ধীরে ব্যাপ্তি ঘটেছে এই মন্দিরের।
রঞ্জন চন্দ