কৌতূহল থেকেই বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন ওই বাড়ির সামনে। জানাজানি হতেই রাজপুর সোনারপুর পুরসভা বিষয়টি তদন্ত করতে এগিয়ে আসে। তেলের নমুনা নিয়ে যান ওএনজিসির বিশেষজ্ঞরা। পুরসভার কর্মীরা ঘষে মেঝে ওই দেওয়াল পরিষ্কার করে দেওয়ার পর তেলের উৎস খুঁজতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। তখন এই প্রশ্নও উঠেছিল যে, কেউ বাইরে থেকে ওই দেওয়ালে তেল ছুড়ে দিচ্ছে না তো ক্যামেরা বসানোর পর দেখা যাচ্ছে, বছর খানেক ধরে যে দেওয়াল তেলে চপচপে হয়ে থাকত, সেই দেওয়ালের গায়ে এক ফোঁটা তেল নেই। । পুরসভার ধারণা, কেউ বা কারা ইচ্ছা করেই পোড়া তেল বাইরে থেকে ওই দেওয়ালে ছুড়ে দিত। যা বেয়ে বেয়ে নীচে নামত।
advertisement
বাড়ির কর্ত্রী শম্পা সরকার বলেন, আগে নিজেরা দেওয়াল পরিষ্কারের পর দু’ তিনদিন যেতে না যেতেই ফের তেল বেয়ে পড়ত। এবার পুরকর্মীরা পরিষ্কার করে দিয়ে যাওয়ার পর ১৪ দিন কেটে গেলেও তেলের দেখা মেলেনি। এটাই স্বস্তি দিয়েছে সরকার বাড়ির সদস্যদের। কিন্তু রহস্যের কিনারা না হওয়ায় তাঁরা পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হতে পারেননি। ওএনজিসি নমুনা পরীক্ষা করে পুরসভাকে যে রিপোর্ট পাঠিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই তেলে অম্লের পরিমাণ ভয়ানক বেশি। প্রতি গ্রাম তেলে ৪০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইডের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। ল্যাবরেটরির পরিভাষায় যা হল, টোটাল অ্যাসিডিক কাউন্ট। সাধারণত অপরিশোধিত তেলে এর মাত্রা থাকে ০.৫ থেকে ১ মিলিগ্রাম পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে একমত হলেও তেলের উৎস নিয়ে বিভ্রান্ত। এই তেল কোথা থেকে আসছে, কেউই তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। ‘প্রাথমিক অনুমান’ বা ‘মনে করা হচ্ছে’- এই ধরনের শব্দ বন্ধনী ব্যবহার করে তাঁরা জানিয়েছেন, সরকার বাড়ির দেওয়ালে তেল এসেছে বাইরে থেকে। তাহলে কি কেউ ষড়যন্ত্র করতে ওই দেওয়ালে তেল ছুড়ে দিত নাকি নিছক মশকরার জন্য কেউ ওই কাণ্ড ঘটিয়েছিল এই প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। যদি ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে এর পিছনে উদ্দেশ্য কী কে বা কারা এই কাজ করেছে, তাও এখনও স্পষ্ট নয়।
সুমন সাহা