ভোরবেলা গাছে উঠে পেড়ে নিয়ে আসা হয় খেজুর রস ভরতি হাঁড়ি। সেই খেজুর রসকে একটি ছাঁকনির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ছেঁকে ঢালা হয় একটি বিরাট বড় পাত্রে। সেই পাত্রকে গরম আগুনে, ফুটিয়ে ফুটিয়ে তৈরি করা হয় খেজুর গুড়। দুই ধরনের গুড় হয়। একটি বেলজিয়াম কাচের মতো স্বচ্ছ নলেন গুড়, অপরটি চিটচিটে গুড়। মূলত শীতকালে তৈরি হয় এই খেজুর গুড়। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বাঁকুড়া জেলায়। এই মহলটি অবস্থিত বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন বদরা গ্রামে।
advertisement
খেজুর গুড় তৈরির যখন ঋতু আসে তখন মহল প্রস্তুতকারকরা মহলের মধ্যেই বসবাস করেন প্রায় ২৪ ঘণ্টা। গাছের দেখভাল করা, রাত্রে গাছে উঠে হাঁড়ি বেঁধে আসা। হাঁড়ির ভিতরে বাদুড় কিংবা অন্যান্য পোকামাকড় ঢুকে পড়ছে কিনা সেটা নজর রাখা। এভাবেই প্রায় দু’ থেকে চার মাস ধরে চলে গুড় তৈরি। নদিয়া থেকে এসেছেন জিলমত শেখ। ভোর চারটে থেকে শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে খেজুর গুড়ের গন্ধ। সাম্প্রতিক কলকাতা থেকে এসেছে এক বিরাট অর্ডার, সেটাই রেডি করতে ব্যস্ত গুড়ের মহলটি।
আরও পড়ুন : ১৩৫ রকম মিষ্টি, ১৫৭ পদ! দেবীর অন্নকূটে প্রসাদ পেলেন ৭ হাজার ভক্ত
প্রান্তরের পর প্রান্তর ধু ধু করছে ফাঁকা জমি। রয়েছে একটি বড় পুকুর, সেই পুকুরের পাড় ঘিরে বেশ কিছু তালগাছ এবং মাঝেমধ্যে দু’ একটি খেজুর গাছ। খেজুর গাছ এক প্রকার ধন্বন্তরি একটি গাছ। এই গাছের প্রতিটি অংশ ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন কাজে।তবে বাঁকুড়া এই খেজুরের বিশেষ ব্যবহার রয়েছে, এবং সেটি হল নলেন গুড় তৈরি। এই নলেন গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় রকমারি মিষ্টি।