পুলিশ সূত্রে খবর, এদিনের নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে গোয়েন্দাপ্রধানের ই-মেইল আইডি থেকে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে-
১) সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে অভিযুক্ত বা সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ বা জেরা করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সাক্ষী বা অভিযুক্তকে থানায় ডাকার আগে নোটিশ পাঠাতে হবে। নোটিশ মেনে থানায় এলে জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে যাওয়ার আগেই মেডিক্যাল টেস্ট করতে হবে। গোটা বিষয়টি লিপিবদ্ধ করতে হবে থানায়। জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের পরেও একইভাবে লিখতে হবে। মেডিক্যাল টেস্টও করতে হবে। প্রসঙ্গত, সিঁথি কাণ্ডে পরিবারের অভিযোগ, ব্যবসায়ী রাজকুমার সুস্থ অবস্থায় থানায় এলেও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বেরোন। পরে আর জি কর হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়।
advertisement
২) জিজ্ঞাসাবাদের পরেও কাউকে গ্রেফতার করে তাকে হেফাজতে নেওয়া হলে তার ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে। অর্থাৎ থানার লক আপে নিয়ে যাওয়ার আগে তাকে ভালো করে পরীক্ষা করতে হবে, যাতে লক আপে কিছু নিয়ে ঢুকতে না পারে।
৩) থানার ভিতরে যেসব সিসিটিভি ক্যামেরা থাকে সেগুলিও নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ সিসিটিভি ঠিক মতো কাজ করছে কিনা তা দেখতে হবে। প্রসঙ্গত, সিঁথি-কাণ্ডে ব্যবসায়ী রাজকুমারকে থানার তদন্তকারী অফিসারদের ঘরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সেই ঘরে তাঁকে মারধর এবং ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। তার জেরেই তিনি মারা যান, এমনটাও দাবি পরিবারের। কিন্তু ওই ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় সেখানে ঠিক কি হয়েছিল তা সিসিটিভিতে ধরা পড়েনি। শুধু যে চুরির ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল, সেই ঘটনায় আসুরা বিবি নামে এক সন্দেহভাজন দাবি করেছেন তার চোখের সামনেই রাজকুমারকে মারধর করা হয়েছে। তাই এই সব 'ভুল' থেকে শিক্ষা নিয়েই এই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে লালবাজার। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সিসিটিভির উপর। ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা এড়াতেই এই নির্দেশিকা বলে মনে করছে পুলিশমহল।
৪) এছাড়া একাধিক ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। এদিনের সতর্কবার্তায় মানুষের সাথে ভালো ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, অভিযুক্তকে তার আইনজীবির সাথে দেখা করার সুযোগ দিতে হবে, যদি গ্রেফতার করা হয় তাহলে জানাতে হবে পরিবারকে। শীর্ষ আদালত গুরুত্ব দিয়ে জানিয়েছে, প্রত্যেক অভিযুক্তরও কিছু অধিকার রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কেও তাকে অবহিত করতে হবে। সিঁথি-কাণ্ডে এই বিষয়গুলি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। তাই ঘুরপথে 'ভুল' স্বীকার করেই থানার প্রত্যেক স্তরের অফিসারকে নতুন এই নির্দেশিকা মানতে বলা হয়েছে।
এদিন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা কলকাতা পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে ওই নির্দেশিকা নিয়ে বলেন, "সুপ্রিম কোর্টের কিছু নির্দেশিকা নতুন করে থানায় পাঠানো হয়েছে। সেগুলি মানতে বলা হয়েছে।"
সুজয় পাল