প্রায় ষাট ফুট উচ্চতার এই কালীমন্দিরটি তৈরি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে৷ পটাশপুরের প্রতাপদিঘি বাজারে প্রায় সাত দশক আগে কালিসাধক লক্ষ্মীনারায়ণ দাস প্রথম কালীপুজো শুরু করেছিলেন।মাটির দেওয়ালে একচালা খড়ের ঘরে মাটির প্রতীমায় লক্ষ্মীনারায়ণ কালী সাধনায় ডুবে থাকতেন। সেই থেকে মন্দিরে ভক্তি টানেএলাকায় মানুষজন ছুটে আসতেন।
আরও পড়ুুন: তিন দিনেই দিঘার জগন্নাথ ধামে কত লক্ষ মানুষের ভিড়? কখন খুলছে- বন্ধ হচ্ছে মন্দির, জানুন সময়সূচি
advertisement
জীবন সায়াহ্নে নিজে হাতে শান্তিশ্বরী কালী আরাধনা করতে না পারায় একজন পুরোহিত নিয়োগ করেছিলেন লক্ষ্মীনারায়ণ। তাঁর মৃত্যুর পর মন্দিরের তত্ত্বাবধান শুরু করেন স্থানীয় লোকজনেরা। ভক্তি ও আস্থার টানে মন্দিরে ক্রমেই ভক্তদের ভিড় বাড়তে থাকে। কালী মন্দিরকে ঘিরে সর্বজনীন উৎসব শুরু হয়। মাটির জীর্ণ মন্দিরে মায়ের পুজো নিয়ে অনেকে আপত্তি তুলেন। সেই থেকে নতুন মন্দির তৈরির ভাবনা শুরু হয়।
২০১৭ সালে মন্দিরের ট্রাস্ট গঠন হয়।পুরনো এই মন্দিরকে ঘিরে এলাকায় আট থেকে দশটি গ্রামের মানুষের ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। ট্রাস্ট তৈরি করে ভক্ত সহ এলাকাবাসীর আর্থিক সাহায্য ও দক্ষিণায় গত ২০১৮ সালে পুরনো মন্দির ভেঙে নতুন মন্দির শুরু হয়। যেহেতু দক্ষিণেশ্বর মন্দির সবার কাছেই পরিচিত এবং প্রত্যন্ত এলাকায় সবার পক্ষে দক্ষিণেশ্বর গিয়ে মন্দির দর্শনের সুযোগ বা সামর্থ্য থাকে না, সেকথা ভেবে দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের অদলে প্রতাপদিঘি বাজারে কালীমন্দির তৈরির ভাবনা শুরু হয়।
গত আট বছরের চেষ্টায় দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে ষাট ফুট উঁচু কালীমন্দির তৈরি হয়েছে। মন্দিরে মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে পাথরের শান্তীশ্বরী কালির বিগ্রহ।মন্দিরে স্থান পেয়েছে রামকৃষ্ণ ও সারদাদেবীর বিগ্রহও। সাড়ে চারশো বর্গফুট জায়গায় এই মন্দির তৈরি হয়েছে। ভক্তদের দান সামগ্রী দিয়ে মন্দির সাজানো হয়েছে। গত বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মন্দিরের উদ্বোধন সহ মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। ১৬ জন পুরোহিত হোম ষজ্ঞের সহ যাবতীয় রীতি মেনে পুজো সম্পন্ন করেন।
দক্ষিণেশ্বরের আদলে কালী মন্দির উদ্বোধন হওয়ায় এলাকায় মানুষের মধ্যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। মন্দিরের ট্রাস্ট কমিটির সভাপতি ভার্গবেন্দ্র নাথ জানা বলেন ‘দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। সেই আবেগ সম্মান জানিয়েই এই শান্তিশ্বরী মায়ের মন্দির তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে। বাড়ির কাছে মানুষ দক্ষিণেশ্বর মন্দির দর্শনের সুযোগ পাবেন।’