বাংলার পুরপ্রশাসনের ইতিহাসে শান্তিপুরের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৮৫০ সালের ১ মে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রথম পুরসভা—দার্জিলিং। এরপর ১৮৫৩ সালের ১ অক্টোবর আত্মপ্রকাশ করে দ্বিতীয় পুরসভা হিসেবে শান্তিপুর পুরসভা। মাত্র তিন সদস্য নিয়ে শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, নবদ্বীপ, বীরনগর ও চাকদহ-সহ একাধিক পুরসভা গঠনের পথকে শক্ত ভিত্তি দিয়েছিল এই প্রাচীন প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানটিকে। পণ্ডিত লক্ষ্মীকান্ত মৈত্রের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব একসময় এই পুরসভার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও বহু বরেণ্য মনীষী এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সময়ে।
advertisement
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শান্তিপুর পুরসভার সদস্য শুভজিৎ দে। বইটিতে রয়েছে পুরসভার পুরনো নথি, গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠানো চিঠি, অডিট রিপোর্ট, পুরনো বিজ্ঞাপন, দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্র এবং বহু অজানা দলিল। শান্তিপুরে পুরসভা পরিচালিত বিদ্যালয়, হাসপাতাল ও কলেজ কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তৎকালীন সময়ে রাস্তার আলোর ব্যবস্থা কীভাবে গড়ে উঠেছিল—এসব বিষয়েও বিশদ বিবরণ রয়েছে বইটিতে। একসময় শান্তিপুর পুরসভার সিদ্ধান্ত নদিয়া জেলা থেকে রাজ্য পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠত, তার বহু প্রমাণও উঠে এসেছে এই গ্রন্থে।
‘শান্তিপুর মরমী’র মতে, এই বই শুধু একটি ঐতিহাসিক দলিল নয়; আগামী দিনের গবেষকদের জন্য এক অমূল্য সম্পদ। শহরের সাংস্কৃতিক ও প্রশাসনিক বিবর্তনের ধারাবাহিক চিত্র তুলে ধরায় এটি শান্তিপুরের ইতিহাসচর্চায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে মনে করছেন সাংস্কৃতিক মহলের অনেকে।