ছেলে কঠিন অসুখ থেকে মুক্তি পেলে ধুমধাম করে কালী পুজো দেবেন মা, সেই রোগ থেকে মুক্তি পেলেও অর্থের অভাবে পুজো দেওয়া আর হয়ে ওঠেনি। এভাবেই কেটে গিয়েছে দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর।
অভাবের সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমনই অবস্থা পরিবারের, এরই মধ্যে মায়ের মৃত্যু হয়, কোনও মতে মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারলেও অর্থের অভাবে মা-কালীর পুজো আর দেওয়া হয়ে ওঠেনি।
advertisement
অনেকবার পুজো দেওয়ার চিন্তাভাবনা করলেও অর্থের অভাবে সেই পুজো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উপার্জন বলতে লটারির টিকিট বিক্রি করে কোন মতে সংসার চলত, অবশেষে ২৭ অক্টোবর আসল শুভ দিন।
এই দিন সমস্ত টিকিট বিক্রি হয়ে গেলেও এক ঘর অবিক্রিত টিকিটে এক কোটি টাকা পান অসীম দত্ত নামে এক লটারি বিক্রেতা। সেই লটারি টিকিট ভাঙিয়ে টাকা হাতে পেয়ে চারটি কালী মায়ের মূর্তি ও ২০৮ টি ঢাক বাজিয়ে ধুম ধাম করে কালী মায়ের পূজো দিলেন লটারি বিক্রেতা অসীম দত্ত।
আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন কয়েকশো অতিথিবর্গ। অসীম বাবুর বাড়ি তেহট্ট থানার নাজিরপুর বাঘাডোবা গ্রামে।
অসীম বাবু জানান বেশ কয়েক বছর আগে আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম, সেই রোগের চিকিৎসা করতে আমার মায়ের অনেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল, আর টাকা খরচ করার মত সামর্থ্য আমার মায়ের ছিল না, তখন মা কালীর কাছে আমার মা মানত করেছিল ছেলে সুস্থ হলে ধুমধাম করে কালীপুজো দেবেন।
এই মানত করার কিছুদিনের মধ্যেই আমি সুস্থ হয়ে উঠি, কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে সেই পূজার দেওয়া হয়ে ওঠেনি। এরমধ্যে মায়ের মৃত্যু হয়, আজকের দিনে মা বেঁচে থাকলে সব থেকে বেশি খুশি হতেন। অসীম বাবু আরও জানান, তিনি একজন সাধারন লটারি টিকিট বিক্রেতা।
নাজিরপুর বাজার এলাকায় প্রত্যেক দিন লটারি টিকিট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে, গত ২৭ অক্টোবর রাত আটটার খেলার ১৫০ টাকার অবিক্রিত টিকিট নম্বরে প্রথম পুরস্কার এক কোটি। লটারিতে এক কোটি টাকা পাওয়ার পরেও প্রত্যেক দিনের মতো এখনও তিনি টিকিট বিক্রি করেন।
সেই লটারি টিকিট ভাঙিয়ে টাকা হাতে পেয়ে প্রথমে চারটি কালী মূর্তি ও ২০৮ টি ঢাক সহযোগে শনিবার কালী মায়ের পূজো দেওয়া হয়েছে। অর্থের অভাবে এক মা মানত করে পূজা দিতে পারেনি, তবে মা কালী আমার দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছে, তাই প্রত্যেক বছর মাকে এভাবে ধুমধাম করে পুজো দেবেন।
Mainak Debnath