শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে একটি হাসিখুশি মেয়ের বিয়ের ছবি, পাশেই রয়েছে রক্তাক্ত, কালশিটে পড়া একটি মেয়ের মুখ ৷ একটু ভালো করে দেখলে বোঝা যায়, হাসিখুশি মেয়েটির ছবির পাশের ছবিটি তাঁর নিথর দেহের ৷ সঙ্গের লেখাটি পড়ে শিউরে উঠতে হয় ৷
পারিবারিক হিংসার বলি হওয়া সহপাঠীর জন্য ন্যায় চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিগুলি পোস্ট করেন মিতার বন্ধু শারদ্বত মান্না ৷ তাঁর পোস্ট থেকেই জানা যায়, মিতা মন্ডলের মৃত্যুকে ঘিরে দানা বেঁধেছে একাধিক প্রশ্ন ৷
advertisement
মিতা মন্ডলের স্বামী রাণা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, দশমীর দিন ভোরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মিতা ৷ তবে মিতার মৃতদেহের অবস্থা দেখে তা মানতে নারাজ তাঁর পরিবার পরিজন ও বন্ধুরা ৷ তারা জানিয়েছেন, মিতার গলায় ছাড়াও গোটা দেহে রয়েছে গভীর আঘাতের চিহ্ন ৷ নাকে মুখে চাপ চাপ রক্ত, কপালে রয়েছে কালশিটে ৷ প্রশ্ন উঠেছে, গলায় দড়ি দিলে এত আঘাত আর রক্ত কোথা থেকে এল? তাতে শ্বশুরবাড়ির পাল্টা উত্তর, মিতার দেহ নামিয়ে আনার সময় ওই আঘাতগুলি লেগেছে ৷ কিন্তু এই দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন মিতার পরিচিতরা ৷
চলতি বছরের ২২ এপ্রিলই উলুবেরিয়ায় রাণা মন্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মিতা দাসের ৷ দুর্গাপুজো চলাকালীন নিজের বাড়িতে এসেছিলেন মিতা ৷ তারপরই সপ্তমীর দিন স্বামী রাণা এসে তাঁকে নিয়ে যান ৷ তখনও কেউ আন্দাজ করতে পারেননি দুর্গাপুজোর শেষে কি হতে চলেছে ৷
আত্মীয়দের দাবি, পণের দাবীতে অত্যাচার চালানো হচ্ছিল মিতার উপর ৷ শেষবার বাড়ি এসে বাবা-মায়ের কাছে এক লক্ষ টাকা চেয়েছিল সে ৷ কিন্তু কী কারণে এই টাকা তাঁর দরকার, তা জানায়নি মিতা ৷
সেলাইয়ের কাজ করে ও ছোটদের পড়িয়ে নিজের এম.এ সম্পূর্ণ করেন মিতা ৷ অভাবী এই সংসার থেকে এক লক্ষ টাকা পাওয়ার কোনও আশা না দেখেই কি প্রাণে মেরে ফেলা হল মিতাকে? উঠেছে প্রশ্ন ৷
মিতার প্রতিবেশী এবং শ্বশুরবাড়ির বাকি আত্মীয়রা এমন ঘটনায় হতবাক ৷ প্রত্যেকেই জানাচ্ছেন মিতার ব্যবহার খুবই ভালো ছিল ৷ কোনও ঝগড়া অশান্তির কথা তারা শোনেনি ৷