তথ্য অনুযায়ী, রাজা সুরথ ছিলেন প্রাচীন বঙ্গ রাজ্যের চন্দ্রবংশীয় রাজা।একসময় তিনি তার রাজ্য এবং সমস্ত সম্পত্তি হারিয়ে ছিলেন।এরপর ভাগ্য ফেরাতে তার রাজধানী বলিপুর (বোলপুর) ত্যাগ করেন। পরে সমাধি বৈশ্যের সঙ্গে তার দেখা হয়। যিনি একজন বণিক ছিলেন। কাকতালীয়ভাবে তিনিও দেউলিয়া ছিলেন। কারণ তাঁর পরিবার তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। তারপর সৌভাগ্যক্রমে তাদের মেধস মুনির সঙ্গে দেখা হয়। তিনি তাঁদের ভাগ্য ফিরে পাওয়ার জন্য দেবী দুর্গার পুজো করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।রাজা সুরথ এবং সমাধি বৈশ্য পশ্চিমবঙ্গের গড় জঙ্গলে মেধস মুনির এই আশ্রমে প্রথম দুর্গোৎসব করেছিলেন।
advertisement
শ্যমরূপার পাশাপাশি দুর্গাপুজোয় মেধসাশ্রমের দুর্গা মন্দিরেও হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়।পশ্চিম বর্ধমান জেলার পুরাতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞ প্রণব ভট্টাচার্য জানান, ওই এলাকায় সামন্ত যুগে বল্লাল সেন ও ইচ্ছাই ঘোষের নানা নিদর্শন মিলেছে।তবে মেধসাশ্রমের ওই দুর্গা মন্দিরটিকে গ্রাস করেছে প্রাচীন ওই দৈত্যাকার অশত্থ বৃক্ষটি। মেধসাশ্রম সূত্রে জানা যায়, ভগ্নদশায় থাকা সেই মন্দিরটি উই ঢিপিতে পরিণত হয়েছিল। বছর ২৫ আগে যোগীরাজ ব্রহ্মানন্দগিরি মহারাজ সেই প্রাচীন মন্দির সংস্কার করেন। শাল পিয়াল মহুয়ার ঘন জঙ্গলের মাঝে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয় ভিড় জমায় লক্ষ লক্ষ মানুষ। শহরের কোলাহল ছাড়িয়ে গভীর জঙ্গলের মাঝে একেবারে অনন্য স্বাদের দুর্গাপুজো কাটাতে পারেন আপনিও।
আরও পড়ুন : দুর্গাদালানের প্রাচীন খিলান ছুঁয়ে যায় ইছামতীর বাতাস, টাকির পুবের বাড়ির পুজো ঘিরে নস্টালজিয়া
কিন্তু কী ভাবে আসবেন এখানে জেনে নিন। কলকাতা থেকে পানাগড় হয়ে মোড়গ্রাম সড়ক ধরে পৌঁছে যান গড় জঙ্গলে। কলকাতা থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার। রাস্তা গড় জঙ্গল। তবে রাত্রে সেখানে থাকার ব্যবস্থা নেই। গড় জঙ্গল থেকে দুর্গাপুর মাত্র ২৫ কিলোমিটার।পুজোয় ভক্তদের যাতায়াতের সুবিধার্থে জঙ্গলের ঢেউ খেলানো কাঁচা রাস্তায় এবার পেভার ব্লকের পাকা রাস্তা তৈরি হয়ে গিয়েছে।অষ্টমী এবং নবমীতে এখানে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী পুজো দেখতে ব্যপক জনসমাগম হয় গভীর গড় জঙ্গলে।