মুঠ পুজোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় আমন ধান ঘরে তোলার পালা। মাঠ থেকে মুঠ আনা হয় লক্ষ্মীর প্রতীক হিসেবে। তারপর দু’বেলা পুজো করা হয় বাড়িতে। মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থেকে সাগরদিঘী সর্বত্রই এটা গ্রামীণ উৎসব। অগ্রহায়ণ মাস মানেই নবান্নের মাস। নতুন ধানের অন্নই হল নবান্ন উৎসব। সোনালী ধান ঘরে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে শুরু হয়ে যায় নবান্নের আয়োজন। কিন্তু তার আগে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে তারা পালন করেন মুঠ পুজো বা মুঠি পুজো।
advertisement
আরও পড়ুন : উইপোকার ঢিবি মোটেই সাধারণ নয়, যেন রাজপ্রাসাদ! ভিতরে শত শত টানেল, অন্দরমহলের পুরোটা বিজ্ঞান নির্ভর
অর্থাৎ তাঁদের ভাষায়, সংক্রান্তি তিথি অনুসারে এই মুঠো পুজো হল এ বাংলার প্রথম লক্ষ্মীপুজো। মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষের কথায়, অধিকাংশ গ্রামে এখন শহরের ছোঁয়া লাগায় তেমনভাবে প্রাচীন রীতি লক্ষ্য করা যায় না। তবে শহর ছাড়িয়ে এখনও কিছু গ্রাম রয়েছে, যেখানে রীতি মেনে সব কিছু করা হয়। সেই রকম কিছু গ্রাম আজও অগ্রহায়ণের সকাল, ভোরের কুয়াশায় ভিজে যায় মাঠ-ঘাটে পায়ে হেঁটে মুঠ ধান নিয়ে আসেন। গৃহবধূ মুনমুন ঘোষের কথায়, মাঠের এক কোণে আড়াই মুঠা ধান কেটে, প্রণাম করে সেই ধানের সমষ্টিকে মাথায় তুলে রওনা দেন বাড়ির পথে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মাঠ থেকে বাড়ির ফেরার পথে কোনও কথা বলতে নেই, রেওয়াজ এমনই। আওয়াজ হলে নাকি মা লক্ষ্মী রুষ্ট হন। নিজের বাড়ির দরজায় এসে দাঁড়াতেই কৃষকের স্ত্রী অর্থাৎ বাড়ির গৃহবধূরা একটা কাঠের পিঁড়েতে গৃহস্বামীকে দাঁড় করান, তারপর মাটির মঙ্গলঘটের জল দিয়ে কৃষকের পা ধুইয়ে, নিজের কাপড়ের আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দেন পা। তারপর সেই গৃহবধূ ভক্তিভরে প্রণাম সেরে, মা লক্ষ্মীকে সাদরে আহ্বান জানান ঘরে। অবশেষে সেই ধানের সমষ্টিকে বাড়ির পবিত্র স্থানে রেখে শুরু হয় পুজো।





