মেয়েটির নাম খুশি খাতুন। বাড়ি ফরাক্কার আলিনগর গ্রামে। মুর্শিদাবাদেই সে তার মাসির বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। গত বুধবার তার মেসোমশাই তাকে বাড়ি যাবার জন্য বাসে তুলে দিতে আসেন। কিন্তু নাবালিকার ইচ্ছে হয় বাসের বদলে ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার। সে কারণে সে বাসে না উঠে ট্রেনে চড়ে বসে। রওনা দেয় মুর্শিদাবাদের ফারক্কার উদ্দেশ্যে। জানালার ধারের একটি আসনে বসে সে। বাইরের দৃশ্য দেখতে দেখতে যাওয়া যাবে ভেবে। কিছুক্ষণের মধ্যে তার চোখে ঘুম নেমে আসে। ঘুমিয়ে পড়ে ওই নাবালিকা।
advertisement
ঘুম যখন ভাঙে তখন সে দেখে কাটোয়া রেল স্টেশনে চলে এসেছে। আসলে ভুল ট্রেনে চড়ে বসেছিল সে। কিন্তু এখন কী হবে। শুরু হয় কান্নাকাটি। তা দেখে এগিয়ে আসেন কয়েকজন। খুশি তাদের জানায়, আলিনগর যাবে সে। স্হানীয়রা ধরে নেন, পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের আলিনগর গ্রামে যেতে চায় মেয়েটি। তারা বর্ধমানগামী ট্রেনে তুলে দেয় তাকে। ট্রেন ছাড়ে যথা সময়ে। কিন্তু এ তো তার চেনা জায়গা নয়! সব কেমন অচেনা। খুশি বুঝতে পারে, আবার ভুল ট্রেনে চেপে পড়েছে সে। দূরত্ব না বাড়িয়ে, সময় নষ্ট না করে সে বলগোনা স্টেশনে এসে নেমে পড়ে।
অনেকটা রাত হয়ে গিয়েছে। কোথায় যাবে! খাবে কী! এবার ভয় পেয়ে যায় ওই নাবালিকা। শুরু হয় কান্নাকাটি। তার কাছ থেকে স্পষ্ট করে কিছু জানতে না পেরে ভাতার থানায় খবর দেন স্হানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার রাত এগারোটার সময় তাকে উদ্ধার করে আনা হয় ভাতার থানায়।
তার ঠিকানা জানতে চান ভাতার থানার পুলিশ আধিকারিকরা। ভয়ে সে উল্টোপাল্টা কথা বলতে শুরু করে দেয়। তাকে শান্ত করেন অফিসাররা। সে বার বারই বলছিল তার গ্রামের নাম আলিনগর। অনেক চেষ্টার পর পুলিশ নিশ্চিত হয় ভাতারের আলিনগর নয়, খুশির বাড়ি ফরাক্কার আলিনগরে।
এরপর মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে শুক্রবার ওই নাবালিকাকে পরিবারের হাতে তুলে দিল ভাতার থানার পুলিশ। পুলিশ কাকুরা তার হাতে তুলে দেয় বড় পুতুল ও অন্যান্য উপহার।