পাঁশকুড়ার চৈতন্যপুর দু-নম্বর অঞ্চলের সরাইঘাট গ্রামের মিষ্টি ভূঁইয়া ফুটফুটে শিশুর জন্ম দেন। শিশুর ওজন ছিল এক ১৮০০ গ্রাম। শিশুটির জন্ম হয়েছিল পাঁশকুড়া মেছোগ্রাম একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। জন্মের পরপরই প্রবল শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় শিশুর। সদ্যোজাতের সাড়াশব্দ না পেয়ে ভয় পেয়ে যান শিশুটির বাবা শান্তনু ভূঁইয়া ও মা মিষ্টি ভূঁইয়া। এরপর কোলাঘাটের শুশ্রুষা শিশু সেবা নিকেতনে নিয়ে এলে সেখানেই শিশু বিশেষজ্ঞ প্রবীর ভৌমিক তার চিকিৎসা শুরু করেন। তাঁর হাতেই নতুন জীবন পায় শিশুটি, স্বস্তি পেয়েছেন শিশুর পরিবার পরিজনরা।
advertisement
ডঃ প্রবীর ভৌমিক বলেন, 'প্রথম ভগবানপুরের ৬ দিনের শিশু কোভিড প্রজেটিভ হয়েছিল এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১০ দিনের শিশুও কোভিড প্রজেটিভ হয়। কিন্তু একদিনের শিশু কোভিড প্রজেটিভ আজ চোখ খুলে দিল আমাদের।' তিনি আরও বলেন, 'শিশুর জন্ম হয়েছিল অন্য এক নার্সিংহোমে। সেখান থেকেই শ্বাসকষ্ট নিয়ে আমার কাছে আসে। এইটুকু শিশুর সিআরপি একশো, ফুসফুসের প্রদাহের মাত্রা এক্সরের মাধ্যমে অমিল পাওয়া যায়। বৈজ্ঞানিক মতে যে চিকিৎসা হয়, তা থেকে একেবারে ভিন্ন ধরনের ফুসফুস। প্রেসার কম, ফুসফুসের প্রদাহ অমিল, সিআরপি স্বাভাবিকের তুলনায় একশো সেই কোভিড প্রজেটিভ শিশুকে অক্সিজেন স্যালাইন ভ্যান্টিলেশনের মাধ্যমে সুস্থতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলে। তবে শিশুটির মাতৃগর্ভে থাকাকালীন ইনফেকশন হয়। কারণ গর্ভবতী মায়েরা কোভিড প্রোটোকল মানছে না, যাঁর ফলে এমন কোভিড পজিটিভ হয়েছে শিশুটির। তবে ৬ দিনের মাথায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায় শিশুটি।'
শিশুটির বাবা বলেন, 'আমরা আমাদের বাচ্চার জীবন মৃত্যুর সব আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। জন্ম নেওয়ার পর থেকে কোনো সাড়া শব্দ ছিল না। এখানে ভর্তি করার পর যখন কেঁদে ওঠে আমার বাচ্চা, তখন ডাঃ প্রবীর ভৌমিক বলেন শিশুটির শ্বাসকষ্ট রয়েছে, সেদিন থেকে চিকিৎসা চলছিল, আজ সম্পূর্ণ সুস্থ, মায়ের কোলে শিশু ফিরল।' এদিন মিষ্টিদেবী এবং শান্তনুবাবু তাঁর ছোট্ট ফুটফুটে শিশুটিকে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেন। ছ'দিনের শিশুকে নিজের চোখে দেখতে পাবেন তার দাদু, ঠাকুমা এবং আত্মীয় পরিজনরা। তাই ভূঁইয়া পরিবারের সদস্যদের সকলেই খুশি।