দেখে নেওয়া যাক সাম্প্রতিক ইতিহাস-
স্বাধীনতাত্তোর ভারতে চার দশকের বেশি সময় এই আসনটিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল কংগ্রেস। ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়ী হন কংগ্রেসের ভুবনচন্দ্র কর মহাপাত্র। ১৯৬২ সালের ভোটে এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন জেলা কংগ্রেস নেতা ঋষিকেশ চক্রবর্তী। পরবর্তীকালে, খান শামসুল আলমও কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়ে এই আসন থেকে জয়লাভ করেছিলেন। ১৯৭৭ -এ অবশ্য আসনটি জনতা পার্টির হাতে যায়। তবে পাঁচ বছরের মাথাতেই ক্ষমতার হস্তান্তর হয়। ফের বিধায়ক হন খান শামসুল আলম। সেই কংগ্রেসি ধারাই চলেছে তারপর আরও দুই দশক। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যে বছর মুখ্যমন্ত্রী হলেন অর্থাৎ ২০০১ সালে প্রথমবার এখানে হানা দেয় কাস্তে হাতুড়ি তারা। বামেদের হয়ে আসনটি জিতে নেন প্রবোধচন্দ্র সিনহা।
advertisement
২০০৬ সালে এগরায় পা রাখে তৃণমূল। আসনটিতে দাঁড়িয়ে জয় ছিনিয়ে নেন শিশির অধিকারী। দিল্লি-পথে শিশির অধিকারী পা বাড়ালে এখানে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছিলেন সমরেশ দাস। ২০০৯ (উপ-নির্বাচন), ২০১১, ২০১৪- তিনবারই এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সমরেশ দাস।
২০১৬ নির্বাচনে জয়ের পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল, তখনও গেরুয়া ঝড়ের আঁচ পাওয়া যায়নি অখণ্ড মেদিনীপুরে। সমরেশ দাস ৫২ শতাংশ ভোট পেলে, বিজেপি প্রার্থীর পেয়েছিলেন মাত্র মাত্র ৬ শতাংশ ভোট। খেলা ঘুরতে থাকে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে । ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি তৃণমূলের তুলনায় ৬ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল এই কেন্দ্রে। পাশাপাশি এলাকার পরিচিত মুখ সমরেশ দাস করোনায় প্রয়াত হওয়ায় তৃণমূলে কিছুটা শূন্যতাও তৈরি হয় এগরায়।
এই অবস্থায় তৃণমূল ২০২১-এ নীলবাড়ির অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে প্রার্থী করেছে তরুন মাইতিকে। কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে মানসকুমার করমহাপাত্রকে। বিজেপি দাঁড় করিয়েছে অরূপ দাসকে। এই অরূপ দাস আবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত দু'দিন ধরে প্রচারে থাকতে পারছেন নায ফলে বিজেপির মাথাতেও চিন্তার ভাঁজ।
তাছাড়া ২০১৯ ভোটের সঙ্গে এই ভোটের ফারাক আকাশ-পাতাল। এই অবস্থায় শিশির অধিকারীর একসময়ের গড় এগরার মানুষ শিশিরের ফেলে আসা দলে আস্থা রাখবেন, নাকি পাল্টা হাওয়ায় গা ভাসাবেন সেটাই দেখার।