তিনি রত্ন প্রসবিনী মেদিনীপুরের শ্রেষ্ঠা বীরাঙ্গনা। ভারতবর্ষের শেষ স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর আত্মত্যাগের মহান নিদর্শন ইতিহাসের পাতায় চিরকাল সমুজ্জ্বল থাকবে। সময় প্রবাহে ভারতবর্ষে অনেক প্রবাদ-প্রতিম বীরাঙ্গনার আবির্ভাব হয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনে অসংখ্য মহীয়সী অগ্নিকন্যাগন অংশগ্রহণ করেছেন, আত্মবলিদান দিয়েছেন। তাঁরা সকলেই প্রনম্যা, প্রাতস্মরনীয়া। কিন্তু এঁদের অনেকের থেকে মাতঙ্গিনী বহুলাংশে স্বতন্ত্র। কারন অন্য অনেকে যাঁরা রাজবাড়ীর প্রশস্ত আঙিনা কিংবা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষিত আঙিনা থেকে এসেছিলেন।
advertisement
অন্যদের মতো পরিবেশ ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় সুশিক্ষিতা হয়ে নন, তিনি এসেছিলেন কেবল স্বদেশপ্রেম ও দেশের জন্য আত্মবলিদানের সংকল্প নিয়েই। হতদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করে, সম্পুর্ন নিরক্ষর হয়ে, মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিধবা হয়েও যেভাবে তিনি যেভাবে দেশের স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, সেটা ছিলো বিস্ময়। গান্ধী আদর্শে দীক্ষিত হয়েছিলেন, তাই এলাকার মানুষের কাছে সেই সময়ই গান্ধী বুড়ি হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তাঁর সেই প্রয়ান ভুমি, তমলুক বান পুকুর আজও চোখ টানে সবারই। বড় বেশি করে মনে হয় আজকের দিন এলেই। কারন অকুতোভয়ে, অমিতবিক্রমে ৭৩ বছরের বর্ষীয়ান এক বৃদ্ধা একঝাঁক শিক্ষিত যুবকদলকে পশ্চাতে ঠেলে দিয়ে পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে দেশমাতৃকার মুক্তিযজ্ঞে নিজেকে আহুতি দিয়েছিলেন, সেটা আর পাঁচজন সাধারনের থেকে অধিক জীবনই ছিলো। তাঁর জীবনদান, আত্মবলিদান যেন একথাই বারবার উচ্চারিত করেছে, যা অনুভূতি হয়েই ধরা দেয়- দেশের জন্য যদি মরতে না পারি, এ জীবনের মূল্য কতটুকু!
SUJIT BHOWMIK