এককালের বহু আকাঙ্ক্ষিত ভারতীয় ডাক বিভাগের একাধিক জিনিস এখন ইতিহাস। হাতেগোনা কয়েকটা বাড়িতে হয়তো পাওয়া যায় পোস্ট কার্ড। একটা চিঠির জন্য যখন রাস্তার মোড়ে পিয়নের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতেন কেউ না কেউ, এখন আর ভেবেও দেখেন না পোস্টকার্ডের গুরুত্ব কতটা? কতটা কষ্ট করে অনেকটা দূর পথ পেরিয়ে পিয়নের বাড়ির লেটার বক্সে চিঠি ফেলে দিয়ে আসা সেই দিন। সেই দিন, সেই মুহূর্ত সেই দিনের মানুষের যোগাযোগ এখন জানে না বর্তমান প্রজন্ম। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সভ্যতা উন্নতি হলেও হারিয়ে যাচ্ছে এককালের ইতিহাস।
advertisement
বদল এসেছে প্রযুক্তিতে। খোলামেলা পোস্ট কার্ডে চিঠি লিখে প্রিয়জনকে দেওয়া শুধু নয়, ডাক টিকিট মাড়িয়ে প্রিয় মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া কিংবা ঠকাস ঠকাস শব্দ করে ডাক বিভাগের কর্মীরা স্ট্যাম্প লাগাতেন, গালা দিয়ে শীল করে চিঠিপত্র পৌঁছে দিতেন অফিসে অফিসে। সেই দিন হারিয়ে যাচ্ছে মোবাইল, ইন্টারনেটের যুগে। অপেক্ষার দিন কবেই ঘুঁচে গিয়েছে। এসে গিয়েছে দ্রুততম ইন্টারনেট। অতি সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে আবেগ ভালোবাসার কথা। স্বাভাবিকভাবে ক্রমে ইতিহাসে পরিণত হচ্ছে ডাক বিভাগে ব্যবহৃত নানা জিনিস।
সাইকেলে চেপে কিংবা স্কুটারে চেপে বাড়িতে চিঠি পৌঁছে দেওয়া, সীসার তৈরি লেটার কি লাগিয়ে স্ট্যাম্প দেওয়া, ২ পয়সা, ৫ পয়সা, ২৫ পয়সা কিংবা ৭৫ পয়সার পোস্ট কার্ডে লিখে নিজেদের প্রয়োজনীয় কথা জানানো একে অপরকে, এখন তা জানে না যুব প্রজন্ম। ইনল্যান্ড লেটার সম্পর্কে ধারণা নেই এই প্রজন্মের কারোর। হারিয়ে যেতে বসা এককালের ইতিহাসকে এখনও ভেবে কষ্ট পান বহু মানুষ।
সেই সমস্ত দিনগুলোর কথা ভেবে খারাপ লাগে ডাক বিভাগের বয়স্ক কর্মীদের। তবে সভ্যতার উন্নতিকে মেনে নিয়েছে সমাজ, আয়ত্ত করেছে যুব প্রজন্ম থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। তবে ক্রমশ কৌলিন্য হারিয়েছে পোস্ট ঘাট ডাকটিকিট থেকে ডাকবিভাগের ব্যবহৃত নানা জিনিস। কালের নিয়মে এককালে বহু মূল্যবান হয়ে দাঁড়াবে এই সকল জিনিসগুলো।