বর্ধমান পৌরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে তিনটি চেকে ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা লোপাট হয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হল বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্টেন্ট সমীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়কে। তাঁকে গ্রেফতার করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশের আর্থিক অপরাধদমন শাখা। আগেই সমীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের নামে এফআইআর দায়ের করে মহারাষ্ট্র পুলিশ।
সোমবার রাতে বর্ধমান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্র পুলিশ।মঙ্গলবার তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে যাওয়ার অনুমতির জন্য বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়৷ আদালত ৩ দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করে আগামী ১০ তারিখের মধ্যে অভিযুক্তকে মহারাষ্ট্রের আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছে।
advertisement
তিনটি চেকে প্রায় ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে। জানা যায়, মহারাষ্ট্রের নাগপুরে একটি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্কের শাখা থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই পুরসভা কর্তৃপক্ষ বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকেও মহারাষ্ট্রে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়৷
মহারাষ্ট্র পুলিশ সেই ঘটনার তদন্তে নেমে আগেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল। এরপর সোমবার রাতে বর্ধমান থেকে গ্রেফতার করা হল সমীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়কে।
এ বিষয়ে বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, চেকে পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার ও ফিনান্স অফিসারের সই থাকার কথা। অথচ যে চেকে টাকা তোলা হয়েছে তাতে পৌরসভার চেয়ারম্যানের সই রয়েছে। তাই সেই চেকে টাকা ওঠার কথা নয়। তার চেয়েও বড় কথা যে নম্বরের চেকে টাকা তোলা হয়েছে সেই চেক পৌরসভায় রয়েছে। অর্থাৎ চেক জাল করে টাকা তোলা হয়েছে। এতে পৌরসভার কোনও দোষ ছিল না বলেই ব্যাঙ্ক সম্পূর্ণ টাকাটাই আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। পৌরসভার তরফ থেকে কোনও ভুল ছিল না বলে ওই ব্যাঙ্ক লিখিতভাবেও আমাদের জানিয়েছে।
মহারাষ্ট্র পুলিশের দাবি, তাদের হাতে গ্রেফতার হওয়া তিনজনের সঙ্গে আগে থাকতেই ফোনে যোগাযোগ ছিল সমীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের। সেই সব তথ্যের ভিত্তিতেই বর্ধমান থেকে সমীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও ফোনে যোগাযোগের বিষয় উড়িয়ে দিয়ে সমীররঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী পার্থ হাটির দাবি, হয়তো ফোন ক্লোন করে কথা বলা হয়েছে। কোনও দুষ্কৃতী সমীরণবাবুর ফোন নম্বর ব্যবহার করে কথা বলেছে। এই প্রতারণার সঙ্গে সমীরণবাবুর কোনও যোগাযোগ নেই বলেই দাবি তাঁর আইনজীবীর।