#ভাতার: মিলল নাকি গুপ্তধন! কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন অনেকেই। বহু দূরের গ্রাম থেকে উৎসাহীরা ভাতারের মাহাতা গ্রামে ভিড় করছেন কাতারে কাতারে। গুপ্তধন মেলেনি এমন কথা বিশ্বাসও করতে পারছেন না অনেকেই। নিশ্চয়ই কিছু তো মিলেছেই- নিশ্চিত তাঁরা। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, সুড়ঙ্গের হদিশ মেলার খবর মিলতেই বাসিন্দাদের ভিড় জমতে শুরু করে। ভাতার থানার পুলিশও যায়। ওই জায়গা ফাঁকাই ছিল বলে জানিয়েছেন জমির মালিক।
advertisement
মাটির তলায় গুপ্তধন থাকতেই পারে - মত অনেকেরই। উৎসাহীরা বলছেন, পুরনো রাজা জমিদারদের বাড়ি হলে ঘড়া ঘড়া মোহর তো মিলতেই পারে। কোন কুটুরিতে কি লুকোনো আছে কে বলতে পারে! সময় নষ্ট না করে বরং খুঁড়ে দেখা হোক গোটা এলাকা। বিরুদ্ধ মতও আছে। কেউ কেউ বলছেন, কিছুই নেই। পুরনো কবরস্থান হতে পারে। কিন্তু কবরস্থান হলে হাড়গোড় তো মিলত- সেসব গেল কোথায়! পাল্টা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
হিরে, জহরত মিলুক বা না মিলুক খনন কাজ শুরু হলে যা মিলবে তা কম মূল্যবান নয় বলেই মনে করছেন ইতিহাসবিদরা। ইতিহাসের গবেষক সর্বজিত যশ বলেন, খনন কাজ শুরু হলে এলাকায় জনপদ কতদূর বিস্তৃত ছিল তা জানা যাবে। এভাবেই পান্ডু রাজার ঢিবি বাংলার ইতিহাস বদলে দিয়েছিল। মোগলমারির ইতিহাস নতুন দিশা দেখাচ্ছে। ভাতার মঙ্গলকোটের জনপদ ২ হাজার বছরের প্রাচীন। খোলামকুচি মিললেও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে তার মূল্য অপরিসীম।
তবে মুখ শুকনো করে ঘুরছেন মাহাতা গ্রামের বাসিন্দা জিয়ারুল মল্লিক। বহু আশা করে সাজানো গোছানো বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন। ইট বালি পাথরের বায়না দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। পিলার তোলার জন্য ছ-ছ’টি গর্তও খোঁড়া হয়ে গিয়েছিল। তেমনই একটা গর্ত থেকে সুড়ঙ্গ বেরিয়ে পড়তেই মুখের হাসি চলে গিয়েছে জিয়ারুলের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে বাড়ি তৈরি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি দল এলাকা খতিয়ে দেখার পর খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করলে আর বাড়ি করা যাবে না বলে আশঙ্কা করছেন জিয়ারুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাই সাধারনের মধ্যে যতই কৌতূহল তৈরি হোক গুপ্তধন মিলল কি মিলল না তা নিয়ে আগ্রহ নেই পরিবারের।