ভাঙা হুইলচেয়ারটা বসে বসে অপেক্ষা করে। যদি কেউ ডাক দেয় ৷ পুরোন দেওয়াল খয়ে খয়ে পড়ে। ফলকের গায়ে পরিচয়টা দেখা যায়। নবকুষ্ঠাশ্রম। সময়ের ঘসায় নামটাও খয়ে গিয়েছে। পাকানো বটগাছটা সাক্ষী থেকে যায় অনেক আসা যাওয়ার। যে আসা যাওয়া খয়ে যাওয়া হাত-পা আর শরীরটা নিয়েই। এই আসা যাওয়ায় দেখা হওয়া আছে। কথা নেই ৷ শুধু বেঁচে থাকা আছে।
advertisement
কুষ্ঠ হয়েছিল। সমাজ, পরিবার ভেবেছিল অভিশাপ । সেরে যাওয়ার পরও ফিরিয়ে নেয়নি। ১৯৩৭ সালে ইংরেজ আমলে পুরুলিয়ার ডাবর বলরামপুরে তৈরি হয়েছিল নবকুষ্ঠাশ্রম। কেউ থাকছেন ১০ বছর। কেউ বা ৪০ বছর। পুরুষ মহিলা মিলিয়ে এখন আছেন ২৯ জন। সরকার থেকে মাসিক ৭৫০ টাকা ভাতা আর মাথাপিছু ১০ কেজি চাল মেলে। রোগে খয়ে যাওয়া জীবন চলে যায় কোনওমতে। ঝাপসা চোখে ওরা দেখে এখানেও ভোট আসে। সময় হলে চলেও যায়। নবকুষ্ঠাশ্রমও ভোট দেয়। নাহ, আশ্রমের হাল ফেরায় না কেউ। কেউ ভাল থাকতে বলে না।
ভাতার টাকাতেই চলে চিকিৎসা। পরিবারের কথা মনে পরে মাঝেমাঝে। তারপর? কুসংস্কারের কোপে কুষ্ঠরোগীদের একসময় ঘেন্না করত সমাজ। পরিবার। কিন্তু এখন তো চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন অনেক। তবুও কেন সমাজ সুস্থ হয় না? কেন পরিবার এখনও তাঁদের ব্রাত্য রাখে ভালবাসায়? গণতন্ত্র কি তাঁদের জন্য নয়? বটপাতা আর শালপাতার শব্দে প্রশ্নগুলো হারিয়ে যায় বোধহয় ৷