বাংলাদেশে কেহ ইতিহাস লেখে না, কেহ ইতিহাস পড়েও না । সেটার প্রতি কখনও লক্ষ্য করিয়াছ ? আমি বোধ করি, এ বড় সুবুদ্ধির বন্দোবস্ত । ইতিহাসে পুরাতন কথা লেখা থাকে; কাজ কি বাবু সে কথায় ?
আক্ষেপ ছিল, ইতিহাসের নাকি কদর নেই। কিন্তু তাঁর বাড়ির পুজো সে কথা বলে না। ইতিহাস আর লোকশ্রুতির চাকা গড়িয়ে এবার ১৪০ বছর। বাংলার অন্যতম রসসাহিত্যিক ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন কাটোয়ার গঙ্গাটিকুরির জমিদার। গল্প চালু আছে, দশভূজা নাকি নিজেই এসেছিলেন। ঘরের মেয়ে করে আদর দিয়েছে ঠাকুরদালান।
advertisement
গল্পটা এই রকম। উদ্ধারণপুর থেকে ফিরছিলেন জমিদার ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেক রাতে জঙ্গল ঘেরা রাস্তার পাশে সন্তান সহ গ্রাম্য বধূকে দেখতে পান। আশ্রয়হীন। তাঁদের অতিথি করে নিয়ে এসেছিলেন ইন্দ্রনাথ বাবু। তারপরেরটা ইতিহাস...
সেই শুরু। এখন জমিদারি নেই। ঠাকুরদালানের পাঁজরে আভিজাত্য এখনও উজ্জল। বেলজিয়াম কাচের রঙে দুর্গা আরও মোহময়ী। সেসময় ১০ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা খরচে আগ্রা থেকে কাচ আনিয়েছিলেন ইন্দ্রনাথবাবু।
সদর দরজার মাথায় হরিণ, গেটে আধমণি তালা, দুয়ারে পালকি। সব যেন পুরোন দিনের চরকি পাক। আজও বাড়ির মহিলাদের গলায় ঘরের মেয়ের জন্য স্নেহ।
যাহার যাহা কপালে লেখা আছে, তাহা ঘটবেই ঘটবে ; মানুষ কেবল নিমিত্তের ভাগী
জমিদার বাড়িতে যৌথভাবে দুর্গা পুজো হত। জ্ঞাতিদের সঙ্গে মনোমালিন্য থেকে সরে আসেন ইন্দ্রনাথবাবু। তবে ঘরের মেয়ের ভালবাসা কমেনি। আলাদা করে ঠাকুরদালানে বসেছে উমা। ১৯০৫ সালে তাঁর তৈরি ট্রাস্ট থেকেই চলছে পরম্পরা। গঙ্গাটিকুরির জমিদার বাড়িতে ইতিহাস লিখেছে এ পুজোর নাম।