গত দিন চারেক ধরে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের উল্টো দিকে রোগীর পরিজনদের বিশ্রামাগারের খোলা বারান্দার পচন ধরা বাঁ পা নিয়ে পড়ে ছিলেন এক ব্যক্তি। মাঝে মধ্যে নিজের দুঃখের কথা সুর করে গান গেয়ে গেয়ে মানুষকে শোনাতেন। অক্ষয় চক্রবর্তী নাম বলে নিজের পরিচয় দিলেও বাড়ি বা পরিবারের নাম বলতে সঠিক করে কিছু পারছেন না । যা বলেন সবই গানের সুর করে শোনান।
advertisement
আরও পড়ুন : অধ্যক্ষের 'দুর্ব্যবহারে' জ্ঞান হারালেন শিক্ষিকা, অভিযোগের চাপানউতোর কলেজে
সহায় সম্বলহীন অক্ষয়ের পেট চলত ভিক্ষে করে। তবে অক্ষয় ১৭ বছর কাটোয়ার কাছে খাজুরডিহির এক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্থাপিত মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আবাসিক হিসেবে ছিলেন বলে দাবি করেন । তাঁর কথায়, লকডাউনের সময় কাজের খোঁজে এক পরিচিতের সঙ্গে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিল। সেখানে গিয়ে রহস্যজনক ভাবে তার বাঁ পায়ের গোড়ালি ভেঙে যায়। দিল্লির চিকিৎসকরা তাঁর পায়ে চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু চিকিৎসা সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই আহত পা নিয়েই আবার ট্রেন ধরে কাটোয়া ফিরে আসেন বলে দাবি করেন তিনি ।
আরও পড়ুন : রাজারানির মূর্তিতে নাকি ঢেকে যায় লর্ড কার্জনের ইতিহাসের মুখ? তরজা তুঙ্গে বর্ধমানে
বুধবার সকালে হাসপাতাল সুপার তাঁকে দেখতে পান। হাসপাতাল সুপারের নজরে পড়লে স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে তাঁর পচনের জায়গা ড্রেসিং করিয়ে স্নান করিয়ে নতুন পোশাক পরানো হয়। এর পর অক্ষয় চক্রবর্তীকে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই এ বার চিকিৎসা হবে অনাথ অক্ষয়ের । কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার শৌভিক আলম বলেন, ‘‘ মানুষের পাশে থাকা আমাদের কাজ। দেখলাম ভদ্রলোক পড়ে আছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের ঘটনার কথা বলার সঙ্গেই সকলে এগিয়ে এসেছে।’’