আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় কল্যাণের বিতর্কিত মন্তব্যের পর নাম না করে গতকাল তাঁকে ‘নারী বিদ্বেষী’ বলে আক্রমণ করেছিলেন মহুয়া৷ এ দিন পাল্টা জবাব দিয়ে মহুয়াকেই নারী বিদ্বেষী বলে কটাক্ষ করেছেন কল্যাণ৷ কয়েকদিন আগে মহুয়ার বিয়ের প্রসঙ্গ তুলে কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে সংসার ভাঙার অভিযোগও এনেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ৷
দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের ঘটনায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মদন মিত্রের বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা করে গতকাল বিবৃতি দেয় তৃণমূল কংগ্রেস৷ দলের সেই বিবৃতিকে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করে মহুয়া লেখেন দেশে সব দলের মধ্যেই নারী বিদ্বেষীরা রয়েছেন৷ নারী বিদ্বেষী মন্তব্য করলেও একমাত্র তৃণমূলই নিজেদের দলের নেতাদেরও সমালোচনা করতে ছাড়ে না বলেও দাবি করেন মহুয়া৷ নারী বিদ্বেষী বলে নাম না করে তিনি যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যয় এবং মদন মিত্রকেই নিশানা করেছেন, তা স্পষ্ট হয়ে যায়৷
advertisement
এ দিন নিজের কেন্দ্র শ্রীরামপুরে দাঁড়িয়েই পাল্টা মহুয়াকে জবাব দেন কল্যাণ৷ শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ‘উনি দেড় মাসের হনিমুন করে কি ভারতে ফিরেছে? আর দেশে ফিরেই আমার পিছনে লাগা শুরু করেছে৷ মহুয়া বলছে আমি নাকি নারী বিদ্বেষী, তাহলে আপনি কী? ৬৫ বছর বয়সি একজনকে বিয়ে করতে গিয়ে চল্লিশ বছরের সংসার ভেঙেছে, ডিভোর্স করিয়েছে৷ তাহলে মহুয়াও তো একজন মহিলার ক্ষতি করেছে৷ সেই মহিলা এখন কোথায় যাবেন বলুন তো?এই বয়সে এসে একজন নারীর সংসার ভেঙে ৬৫ বছরের পুরুষকে বিয়ে করে আমি তাঁকে কোনও সুস্থ মনস্ক নারী বলে মনে করি না৷ উনিই আসল নারী বিদ্বেষী৷ আমি জানি অনেক মহিলা আমার কথার বিরোধিতা করবেন, কিন্তু ভাবুন তো আপনাদের স্বামীরা যদি বিয়ের তিরিশ বছর পর আপনাদের ছেড়ে চলে যায়?’
আরও পড়ুন: ‘প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করছেন দলের নেতারাই’, তৃণমূলের বিবৃতির পরই বোমা ফাটালেন কল্যাণ
মহুয়াকে আক্রমণ করে কল্যাণ আরও বলেন, ‘২০১১-র পর এরা দলে এসেছে৷ তৃণমূল কংগ্রেসের ভাল সময়ে এমএলএ হয়েছে, তার পর সাংসদ হয়েছে৷ এখন সেই পদকে ভেঙে খাচ্ছে৷’
কল্যাণের অভিযোগ, দলনেত্রীর নির্দেশের পরেও তাঁকে নদিয়ার কালীগঞ্জে গিয়ে সভা করতে দেননি মহুয়া৷ এমন কি, দলের সিনিয়র নেতারাও কৃষ্ণনগরে গেলে মহুয়া মৈত্র নিজের লোকদের দিয়ে তাঁদের অপমান করান বলে অভিযোগ করেছেন কল্যাণ৷ তাঁর কটাক্ষ, ‘উনি বিদেশে বসে বসেই সব নিয়ন্ত্রণ করছেন৷’
মহুয়াকে সবিধেবাদী বলতেও ছাড়েননি কল্যাণ৷ তিনি বলেন, ‘আমি নারীদের জন্য সবথেকে বেশি কথা বলি৷ আর মহুয়া মৈত্র এতটাই নারী বিদ্বেষী যে নিজের সংসদীয় এলাকায় কোনও মহিলা নেত্রীকে উঠতে দেন না৷ উনি একজন লোভী মহিলা৷ অন্যকে নারী বিদ্বেষী বলে আসলে নিজে ফায়দা লুঠতে চায়৷ আমি একজন নারীকেই ঘৃনা করি, তিনি হলেন মহুয়া মৈত্র৷ এরা কবে রাজনীতিতে এসেছে? রাহুল গান্ধির বান্ধবী বলে কৃষ্ণনগরে রাজনীতি করত৷ তার পর ২০১১ সালে তৃণমূলে চলে এল৷’ মহুয়া এবং কল্যাণের মুখে লাগাম পরাতে এবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই দেখার৷