পূর্ব বর্ধমানের গঙ্গা তীরের প্রাচীন শহর কালনা। মন্দিরের টানে এ শহরে পর্যটকরা আসেন সারা বছর। পর্যটকদের কাছে শহরকে আরও আকর্ষণীয় করতে কিছু দিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছে পর্যটন উৎসব। এবার এই শহরে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক সংস্থা উদীচী। সেই উৎসব উপলক্ষেই শহরের বিভিন্ন এলাকা সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা করে সংস্থার সদস্যরা। তাদের সঙ্গে সেই কাজে হাত লাগায় শহরের যুবক যুবতীরা। শহরের দশটি এলাকাকে বেছে নিয়ে রাত জেগে আলপনা দেওয়া হয়।
advertisement
এই কাজে যুক্ত তরুণ তরুণীরা জানিয়েছেন, দশটি রাস্তাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। সেইসব রাস্তা ঝাঁট দিয়ে জল দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয়। তারপর চক দিয়ে আলপনা এঁকে তা রংয়ে রংয়ে রাঙিয়ে তোলা হয়। সকালে রাস্তায় বেরিয়ে সুন্দর আলপনা দেখে বেজায় খুশি বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, চারদিকে অপ-সংস্কৃতির বন্যা বইছে। তাতে গা না ভাসিয়ে কালনার ছেলে মেয়েরা সুস্থ সংস্কৃতির জন্য রাত জাগলেন ভেবেই তৃপ্তি মিলছে। সবাই মিলে ভাল কাজে হাত লাগালে তার যে চিরস্থায়ী ছাপ থেকে যায়, এই শিল্পকর্মই তার প্রমাণ। শহরবাসী খুশি হওয়ায় তৃপ্ত এই শিল্প কর্মের সঙ্গে যুক্তরা। তাঁরা বলছেন, সকলের বাহবায় আমরা উজ্জীবিত। আরও ভাল কিছু করার জন্য আমরা উৎসাহিত হচ্ছি। রাস্তার ধারের মলিন দেওয়াল রঙ করে ছবি এঁকে আকর্ষণীয় করে তোলারও পরিকল্পনা রয়েছে।
রাতে আলপনা আঁকা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে থেকে তাঁদের উৎসাহ যোগান কালনার বিধায়ক বিশ্বজিত কুন্ডু। তাঁর বক্তব্য, উদীচীর এই উদ্যোগ কালনা শহরে অভিনব। সুস্হ সংস্কৃতির পরিচয় দিয়ে তারা আমাদের শহরকে গর্বিত করেছে। তাদের জন্য এবার কালনা শহরে বসন্ত উৎসব আলাদা বার্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে। শুধু আলপনা আঁকাই নয়, প্রত্যেকের কপালে আবিরের তিলক এঁকে বড়দের আর্শীবাদ নিচ্ছেন কালনার এই তরুণ তরুণীরা। অভিভাবকরা বলছেন, বড়দের দেখেই শেখে শিশু কিশোররা। নাচ গান, সুস্থ সংস্কৃতির মধ্য দিয়েই এগিয়ে যাবে বাংলার ঐতিহ্য। কালনায় শুরু হওয়া এই সংস্কৃতি অন্যত্র ছড়িয়ে পড়বে আজকের শিশু কিশোররা।
Saradindu Ghosh