এই মেলা নিয়েই প্রধান শিক্ষককে বলতে শোনা গিয়েছে, "পড়াশোনা করে ১০০ শতাংশ চাকরি হবে না এই রাজ্যে। সুতরাং, অন্য কিছু ভাবা দরকার। যেমন, চপ শিল্প।" প্রধান শিক্ষকের এই কথাতেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক।
আরও পড়ুন: ৬ ফুট উঁচু! এত বড় শিবলিঙ্গ রাজ্যে আর কোত্থাও নেই, শিবরাত্রিতে পুজো দিয়ে আসুন এই মন্দিরে
advertisement
কালনার ঐতিহ্যবাহী স্কুল অম্বিকা মহিষমর্দিনী উচ্চ বিদ্যালয়। কালনার এক নম্বর ওয়ার্ডের ভাদুড়িপাড়ায় অবস্থিত এই স্কুল ১৯৪৩ সালে স্থাপিত হয়। এই স্কুলের প্রতি বছরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ভাল রেজাল্ট করে ছাত্ররা। মহকুমা এলাকাতেও ভাল নাম রয়েছে এই স্কুলের।
স্কুলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকলেও এ বছরের অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল শান্তিনিকেতনের আনন্দমেলার আদলে। তাতে বেশ খুশিই ছিলেন ছাত্র থেকে অভিভাবকেরা।
আরও পড়ুন: শিবরাত্রিতে ঘুরে আসুন মহাদেবের এই মন্দিরে, শিল্পাঞ্চলে বসেও পাবেন অপার শান্তি
এই অনুষ্ঠানেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দাবি করেন, "পড়াশোনা করলেই ১০০ শতাংশ মানুষ চাকরি পায় না। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্র জীবন থেকে যদি ছাত্ররা নিজেদের কাজ নিজেরা করে, তবে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করা সহজ হয়। তাহলে আর চাকরির ভরসা করতে হয় না।"
প্রধান শিক্ষকের দাবি, "স্কুলের সামনে একটি ফুচকা বিক্রেতা ফুচকা বিক্রি করে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা উপার্জন করে। মুখ্যমন্ত্রী যে চপ শিল্পের কথা বলেন, সেই চপের ব্যবসা করলেও আর্থিক উপার্জন হয় সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকা যায়।"
প্রধান শিক্ষককে কাছে বিজেপি নেতাদের প্রশ্ন, "তাহলে কর্মশিক্ষা রয়েছে কী করতে? আসলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাহবা পেতে এবং তিনি দলের কাছে পরিণত হওয়ার জন্য এই পদক্ষেপ করেছেন ওই প্রধান শিক্ষক।"
এই মেলায় ৫০ টি স্টল ছিল। এই আনন্দমেলায়, টি স্টলে ছাত্রদের তৈরির চা, চিলি চিকেন, ছাত্রদের হাতে আঁকা ছবি ও ছাত্রদের হাতে তৈরি বিভিন্ন রকম ঘর সাজানোর সামগ্রীর পসরাও সাজানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই দুদিন মেলা চলে স্কুল প্রাঙ্গণে।
প্রথাগত শিক্ষার বাইরে স্কুলের পড়ুয়াদের কর্মসংস্থানের দিশা দিতেই দুদিনের এই আনন্দমেলার আয়োজন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা বলে এই বয়স থেকেই পড়ুয়াদের চপ তৈরি বা চায়ের দোকান খোলার মতো কাজে উৎসাহ দেওয়া হবে এমনটা মানতে পারছেন না অনেক অভিভাবকই। অনেকের বক্তব্য, মেধাবী ছাত্ররা সকলে সরকারি চাকরি না পেলেও, তাদের কর্মমুখী করে তোলার আরও নানান পরিকল্পনা স্কুলের তরফে দেওয়া যেতেই পারত। সবার শেষে আসতে পারত, চপ তৈরি বা চায়ের দোকান খোলার মতো কর্মসংস্থানের পথ। কিন্তু প্রথমেই সেই রাস্তায় হেঁটে এই পরামর্শ দেওয়া, যে কোনও ঐতিহ্যবাহী স্কুলের পক্ষে কতটা শোভনীয়, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
