এখানে মা কালীর পদতলে শিব নন, বরং শিবের পদতলে রয়েছেন মা কালী। আর কালীর বুকে পা রেখে দাঁড়িয়ে আছেন দেবাদিদেব মহাদেব। এমন অনন্য রূপেই বছরের পর বছর পুজিত হয়ে আসছেন মা কালী মধ্যমগ্রামের মহাকাল মন্দিরে। শিবের অপর নাম ‘মহাকাল’। সেই সূত্রেই মন্দিরটি স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ‘মহাকাল মন্দির’ নামে। মধ্যমগ্রাম চৌমাথা থেকে বাদু রোড ধরে মিনিট দশেক হাঁটলেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই মন্দিরে। স্থানীয়দের কথায়, বহু বছর আগে এই জমি ছিল রানী রাসমণির এস্টেটের অধীনে। রানি তাঁর এক পারিষদকে মধ্যমগ্রামের এই জমি দান করেছিলেন।
advertisement
আরও পড়ুন : এই ‘বিশেষ পোষাক’ পরলে চোখের সামনে হাজির হবেন মহাকালী, দেবীকে মনে হবে জীবন্ত! কী দিয়ে তৈরি হল জানেন?
তখন এখানে ছিল একটি ছোট শিবমন্দির ও শিবলিঙ্গ। পরবর্তীকালে উত্তরাধিকার সূত্রে তাঁর ছেলে এই জমির অধিকার পান এবং এখানে নতুন করে মন্দির নির্মাণের চিন্তাভাবনা শুরু করেন। কথিত আছে, একদিন ওই জায়গায় হঠাৎই উড়ে এসে পড়ে একটি পুরনো ক্যালেন্ডার। ক্যালেন্ডারের পাতায় ছিল বিশেষ এই উল্টো ধরনের ছবি, যেখানে শিবের পদতলে রয়েছেন মা কালী। সেই ছবির আদলে ১৯৮০ সালে নির্মিত হয় মধ্যমগ্রামের মহাকাল মন্দির।
এই অনন্য রূপের পেছনেও রয়েছে পৌরাণিক তাৎপর্য। পুরাণ মতে, রক্তবীজ নামের অসুরকে বধ করার পর ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন কালী। রাগের বশে যখন তিনি ধ্বংসযজ্ঞে মেতে ওঠেন, তখন বিশ্বরক্ষার জন্য শিব নিজেই তাঁর পদতলে শুয়ে পড়েন। কালীর পা শিবের বুকে পড়তেই তিনি লজ্জায় জিভ বের করে ফেলেন, এই রূপই সর্বজনবিদিত।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তবে মধ্যমগ্রামের মহাকাল মন্দিরে এমন উল্টো বিশ্বের কারণ হিসেবে মন্দিরের প্রধান সেবায়িত সিদ্ধার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মা কালীর পদতলে শিব, এই রূপই সাধারণত দেখা যায়। কিন্তু মহাকাল মন্দিরে শিবের রূপ আরও উগ্র, আরও ভয়ংকর। তাই এখানে শিবকে শান্ত, সৌম্য রূপে দেখানো হয়েছে, আর তাঁর পদতলে রয়েছেন কালী। শিবের এই রূপই মহাকাল রূপ। তাই এখন এলাহী আয়োজনে চলছে পুজোর তোড়জোড়।