সংবাদমাধ্যমের সামনে ছেলের মৃত্যুর পিছনে সরাসরি সিপিএমের প্রতিহিংসার রাজনীতিকে দায়ী করেছেন নিহত তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনের বাবা ইলিয়াস লস্কর৷ ইলিয়াসের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে বিপুল ভোট পেয়ে বোর্ড দখল করেছে তৃণমূল৷ আমার ছেলের জন্যই সেটা হয়েছে৷ কোনও রিগিং হয়নি৷ সবাই নিজে থেকে ভোট দিয়েছে৷ এটাই সিপিএমের লোকেরা সহ্য করতে পারছিল না৷ তাই এই ভাবে প্রতিশোধ নিল৷’’
advertisement
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও দাবি করেছেন, এলাকার সিপিএম নেতা-কর্মীরাই ষড়যন্ত্র করে খুন করেছে সইফুদ্দিনকে। এলাকা দখলের উদ্দেশ্যেই এই খুন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বগটুই কাণ্ডের ছায়া জয়নগরে! তৃণমূল নেতা খুন, দাউ দাউ করে জ্বলছে গোটা গ্রাম
এদিকে, তৃণমূল নেতার খুনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্রমে উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়৷ অভিযোগ, সোমবারই সকাল ৭টা নাগাদ বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দোলুয়াখাঁকি নস্কর পাড়া এলাকায় হামলা চালানো হয়। এই এলাকায় মূলত সিপিএম কর্মীদের বাস বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
দোলুয়াখাঁকির বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ তোলেন, সইফুদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েতেই তাঁদের গ্রামের একের পর এক বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালান উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা। সিপিএম সমর্থকদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বহু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তাতে প্রায় সর্বস্ব পুড়ে যায় অনেকের। আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পুরুষরা পালিয়ে গিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি দমকলকে৷ গ্রামের মহিলারাই পুকুর, কুয়ো থেকে বালতি করে জল তুলে আগুন নেভাতে শুরু করেন৷
আরও পড়ুন: কালীপুজো-ভাইফোঁটায় বৃষ্টি? সাগরে নিম্নচাপের কালো মেঘ, ভাসবে কোন কোন জেলা?
যদিও গোটা ঘটনার পিছনে সিপিএমের কোনও রকমের যোগসাজশ থাকার কথা এককথায় অস্বীকার করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ তাঁর অভিযোগ পাল্টা তৃণমূলেরই দিকে৷ সুজন চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভাগ বাটোয়ারা করতে গিয়েই এই খুন হয়েছে৷ কিন্তু, নিজেদের অপরাধ ঢাকতে দোলুয়াখাঁকিতে গিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে, ভাঙচুর করা হয়েছে৷ তাঁদের দোষ, তাঁরা সিপিএম করে৷ এ দায় তৃণমূলকে নিতে হবে৷’’
তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা অবশ্য পাল্টা ঝাঁঝাল আক্রমণ শানিয়েছেন সুজন চক্রবর্তীদেরই উপর৷ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সিপিএম ও বিজেপি মিলে এই কাজ করেছে৷ এর দায় সুজন চক্রবর্তীদের নিতেই হবে৷ এই খুন, এই আগুনের দায় শুভেন্দু অধিকারীদের নিতেই হবে৷’’