প্রাতঃভ্রমণের সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে মহান কর্মযজ্ঞে নেমে পড়ে সে। তাঁদের এই উদ্যোগে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে অনেক অসহায় পথ কুকুর।সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে তাঁরা দেখেছিল রাস্তার পাশে পথ কুকুরগুলি সারাক্ষণনিজের গায়ে কামড় দিচ্ছে। কারও আবার শরীরে অজস্র ক্ষত । এইসব দেখার পর তাঁরা ভাবনা চিন্তা করে এদেরও চিকিৎসার প্রয়োজন।
প্রাণী চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানালে তখন তাঁরা জানতে পারে কুকুরের শরীরে উকুন হলে তারা সেই উকুনের হাত থেকে বাঁচার জন্য সারাক্ষণ শরীরে কামড় দিতে থাকে। আর কামড়ের ফলেই শরীরের একাধিক জায়গায় ক্ষত হয় এবং সেই ক্ষত থেকে ধীরে ধীরে মারা যায় কুকুরটি।
advertisement
প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ মতই পথ কুকুরদের শরীরের উকুন মারার জন্য পাউডার, ক্ষত শুকনো করার জন্য স্প্রে ও খাওয়ার ওষুধ নিয়ে আসে তাঁরা। কিন্তু কি করে ওষুধ খাওয়ানও যায় পথ কুকুরদের সেটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। রসগোল্লার মধ্যে ওষুধ ঢুকিয়ে পথ কুকুরদের ওষুধ খাওয়ানও শুরু করে তাঁরা।
বিস্কুট, পাউরুটির লোভ দেখিয়ে সারা শরীরে পাউডার ও ঘা শুকনো হওয়ার জন্য স্প্রে করে দেয়। এই ভাবেই কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ২০টি পথ কুকুরকে সুস্থ করে ফেলেছে শেখ নাসিরুদ্দিন-সহ তাঁর প্রাতঃভ্রমণের সঙ্গীরা। শেখ নাসিরুদ্দিন বলেন, “আমরা বেশ কয়েকজন প্রতিদিন প্রাতঃভ্রমণে যাই। তখনই দেখি রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন জায়গায় পথ কুকুর গুলি তাদের শরীরে কামড় দিচ্ছে এবং ছটফট করছে। কারও শরীরে বড় বড় ক্ষত হয়ে রয়েছে। এইসব দেখে আমরা সকলে মিলে ঠিক করি এই পথ কুকুর গুলির চিকিৎসা করার জন্য।’’
সেইমতো উকুন মারার পাউডার, ঘা শুকনো করার স্প্রে এবং ওষুধ নিয়ে আসেন তাঁরা৷ অসুস্থ কুকুর গুলিকে চিহ্নিত করে সেই ওষুধগুলোও দেওআ হয়ে থাকে। ইতিমধ্যেই অনেকগুলি কুকুর সুস্থ হয়েছে।
শেখ নাসিরুদ্দিন , সুধাকর মন্ডল, মীর আক্তার আলী, সুনীল পাত্র, শান্তনু সাও, উজ্জ্বল দাস, প্রশান্ত গোয়ালা-সহ আরও বেশ কয়েকজনের এই মানবিক উদ্যোগে সুস্থ হয়ে উঠেছে বহু পথ পুকুর। সুস্থ হওয়া একটি পথ কুকুর তাঁদের প্রাতঃভ্রমণের সঙ্গীও হয়ে উঠেছে। তাঁরা সকলেই তাকে ভালোবেসে বল্টু বলে ডাকে। তাঁদের এখন একটাই স্বপ্ন রাস্তায় অবহেলার সঙ্গে পড়ে থাকা বল্টুদের সুস্থ করে তোলা।
বুদ্ধদেব বেরা