এটি অনেকেই হাট থেকে কিনে আনেন আবার অনেকে জঙ্গল থেকেও সংগ্রহ করেন। মূলত এটি আলপনা তৈরিতেই ব্যবহৃত হয়। প্রথমে এটিকে থেতো করে জলে ভিজিয়ে দেওয়া হয়। পরে তা এক ধরনের পিচ্ছিল আঁঠায় পরিণত হয়। পরে আঠালো রসের সাথে আতপ চালের গুড়ির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। সেই উপকরণটিকে হাতের আঙুলের সাহায্যে উঠোনের চারপাশ এবং দরজার মুখে ঐতিহ্যবাহী নানান প্রকার নকশা বা আলপনা আঁকা হয়। বেলপাহাড়ির বাসিন্দা স্বপন দাস বলেন ‘গরুর গোয়াল থেকে খামার পর্যন্ত আলপনা দেওয়া সেই আলপনা তৈরিতে এই প্যানো লতা বা পুইন্যা লতার ব্যবহার করা হয়।’
advertisement
আলপনা আঁকার ক্ষেত্রেই মূলত এই লতা জাতীয় গাছটির ব্যবহার করা হয়। কালীপুজো, দুর্গাপুজো এবং লক্ষীপুজোতে বিভিন্ন ধরনের আলপনা আঁকা হয়। আলপকনার জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের নামি দামি ব্র্যান্ডের রঙ পাওয়া যায়। কিন্তু জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা অত্যন্ত সৌখিনতার সাথে এই প্রাকৃতিক লতা জাতীয় গাছটিকে ব্যবহার করেই আলপনা দেন। এটির দাম অত্যন্ত সুলভ। মাত্র ১০ টাকাতেই পাওয়া যায়। এটি রং সাদা অনেকেই আবার এর সাথে নানান প্রকার রং মিশিয়ে রংবেরঙের করে তোলে ঘর দোর কে। যা অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
ফি বছর কালীপুজোর সময় বাঁদনা-সহরায় উৎসবে মেতে উঠেন জঙ্গলমহলবাসী। বসন্তের বাহা পরবের মত এই সহরায় উৎসবও সাঁওতাল আর মুন্ডা জনগোষ্ঠীর কাছে সমান ঐতিহ্যের। শুরু হয়েছে নিজেদের বাড়ি সাজানো, দেওয়ালে মাটির প্রলেপ দেওয়া, ছবি আঁকা, গবাদি পশু সাজানোর তোড়জোড়। গোটা জঙ্গলমহল যেন নতুন করে প্রাণ পেয়েছে এই উপলক্ষে। এই পরবকে কেন্দ্র করে নানান রীতিনীতি পালন করেন রাঢ় বাংলার অধিবাসীরা।