সে প্রায় চারশ বছর আগের কথা। লোককথা বলে, জাম্বনির চিল্কিগড় রাজ পরিবারে মহা ধূমধামে পূজিত হতেন মা কনক দুর্গা। কিন্তু এই পুজোতে প্রবেশাধিকার ছিল না লোধা-শবরদের। রাজ পরিবারের সঙ্গে বিরোধ তারপর যুদ্ধ। পরাজিত হন আদিবাসীরা। এই পরাজিত লোধা-শবররাই পরবর্তীতে কুশবনির জঙ্গলে আশ্রয় নেন। সেখানেই কনক দুর্গার অংশ হিসেবে মা দুর্গামণির পুজো শুরু করেন তারা।
advertisement
যুদ্ধে হেরে পিছু হঠতে হয়েছিল লোধা-শবরদের। নিজের জমি থেকে উৎখাত। গবেষকরা বলছেন, নিরাপদ ভ্রমণ, শিকার এবং অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদ থেকেই মা দুর্গামণির শরণ। তবে এই পুজোয় কোনও পুরোহিত নেই। পুজো করেন লোধা-শবররাই। ফলে শাস্ত্রীয় নিয়মের কোনও বালাই নেই। লোকায়ত নিয়মেই হয় পুজো। সেই প্রথা আজও চলছে।
শাল-সেগুনের ঘন জঙ্গল । তার মাঝেই ফাঁকা একফালি জমি। বিরাট এক অশ্বত্থ গাছের নীচে ছোট্ট একটি বেদী । দশভুজার আরাধনার চারদিন এখানে কোনও ধূমধাম নেই। এখানে মায়ের আবাহনও হয় না। বিসর্জনও হয় না। মা দুর্গামণির এখানে একান্তে নির্জন বাস করেন পুজোর ক’দিন। কনকদুর্গা, রাজনুগ্রহে পুজো পান। আর তাঁর বোন দুর্গামণি অপেক্ষায় থাকেন পয়লা মাঘ পর্যন্ত।
লোকায়ত নিয়মে দুর্গার নামে পোড়ামাটির হাতি-ঘোড়ার পুজো। নাম হয় মা দুর্গামণি। ঝাড়গ্রামের অদূরে বনপুকুরিয়া শবরপাড়ার এই পুজো ঘিরে রয়েছে অনেক গল্পকথা। পরবর্তীকালে এই পুজো আরও একটি অংশে ভাগ হয়ে যায় । জাম্বনির সানগ্রামে জুগিবাঁধের মানুষজন আলাদা করে মা দুর্গামণির পুজো করেন।