তাঁর ক্রিয়েটিভিটি, পড়াশোনা এবং বুদ্ধিমত্তা এনে দিয়েছে সম্মান। শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বীকৃতিস্বরূপ জুটেছে জাতীয় এবং রাজ্যস্তরের একাধিক সম্মাননা। মুখে পেন ধরে লিখে, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এমনকি কম্পিউটার সায়েন্সে বি.টেক পাশ করেছেন এই যুবক। হাতে লেখার ক্ষমতা নেই, পারেন না ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার চালাতে। তাই তাঁর ভরসা থুতনি। সেভাবেই অনায়াসে চালান ল্যাপটপ, মোবাইল। সাধারণ পেন মুখে ঢুকিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তার পড়াশোনা, লেখালেখি। ছোট থেকে নিজেকে বিশেষভাবে সক্ষম না ভেবে আর সাধারণ পাঁচজন ছেলে মেয়েদের মত নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই শুরু করেছেন। আইআইটি থেকে এম.টেক করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তিনি।
advertisement
ইতিমধ্যেই সরকারি বিভিন্ন মহল থেকে মিলেছে পুরস্কার। কখনও রাষ্ট্রপতি, আবার কখনও শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে পেয়েছেন সম্মাননা। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর শহরের মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা তুহিন দে। বয়স ২৫ বছর। ছোটবেলায় আইআইটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনার পর রাজস্থানের কোটা থেকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স এর প্রস্তুতি এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। এর পর আইআইএসটি শিবপুর থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে সম্প্রতি বি টেক পাশ করেছেন তুহিন। এ যাবৎ পর্যন্ত তেমন কোনও গৃহশিক্ষকের প্রয়োজন পড়েনি তাঁর। নিজের ইচ্ছেতেই প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। প্রয়োজনে মুখ দিয়ে লেখা চালিয়ে যেতে হয় তাঁকে। এটাই অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে ছোটবেলা থেকেই। তবে প্রয়োজনে মোবাইল কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহারে তাঁকে কাজে লাগাতে হয় থুতনি।
খড়গপুর শহরের ব্যবসায়ী সমীরণ এবং সুজাতা দে-এর একমাত্র ছেলে তুহিন। ছোট থেকেই অর্থো গ্রাইপোসিস মাল্টিপ্লেক্স কনজেনিটা নামক মাংসপেশীর এক বিরল রোগে আক্রান্ত। ফলে মাংসপেশির ক্ষমতা কম। তবে মনের জোর তাঁর অদম্য। মনের জোরকে সঙ্গী করে আর পাঁচজনের মতো নিজেকে তৈরি করে সমাজে এগিয়ে চলেছেন তুহিন। বিশেষভাবে সক্ষম হয়েও সমাজের কাছে সক্ষমতার নজির তৈরি করেছেন তিনি। অন্যান্য সকলকে দিচ্ছেন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ভাবনা। সকলের কাছে নজিরবিহীন অনুপ্রেরণা খড়্গপুরের তুহিন।