২০১৪ সালে টুম্পার বাবা বাপি দাস মারা জান। টুম্পার বাবা পেশায় ডোমের কাজ করতেন বারুইপুরের জোড়া মন্দির শ্মশানে। তখন মাঝেমধ্যে শ্মশানে বাবার কাজ দেখতে আসতেন টুম্পা দাস। হঠাৎ টুম্পার বাবা মারা যান, পাঁচজনের সংসার চালাতে টুম্পা হিমশিম খাচ্ছিলেন। বাড়ির বড় মেয়ে টুম্পার বয়স তখন মাত্র উনিশ বছর।সমাজে অনেকের আপত্তি সত্বেও টুম্পা নিজের ইচ্ছায় এই কাজ বেছে নিয়েছিলেন।
advertisement
টুম্পা জানতেন, এই কাজ ছাড়া তার সংসার বাঁচানো অসম্ভব। শ্মশানে তখন কাঠের চুল্লি। চাপও ছিল টুম্পার, কিন্তু সেই চাপ নিয়েই সাহসের সঙ্গে হাসিমুখে কাজ করত টুম্পা। চুল্লি সাজানো থেকে শুরু করে মৃতের অস্থি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া। এখনও সমস্ত রকমের কাজই দেখে টুম্পা, শ্মশানের দায়িত্বটা এখন টুম্পার উপরে। শ্মশানে প্রথম দিকটা ভয়ে আতঙ্কে থাকতেনটুম্পা। কিন্তু জীবনযুদ্ধে তাঁকে লড়াই করে জিততে হবে, সেই সাহস নিয়ে হাসি মুখে জিতে গিয়েছে টুম্পা।
আরও পড়ুন: উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের বিকল্প পেয়ে গেলেন বাংলাদেশিরা! দলে দলে যাচ্ছেন সেই দেশে
মৃতের পরিবাররাও টুম্পাকে প্রায় সব সময় সাহায্য করেন এমনটাই জানান টুম্পা। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে মাঝেমধ্যেই টুম্পা শ্মশানে এসে তার বাবার কাজকর্ম দেখে অবাক হত। বাবা মরা ঘেঁটে আমাদেরকে মানুষ করছে, আজ টুম্পা সেই ডোমের কাজে ব্যাস্ত। এখন যদিও টুম্পা অস্থায়ী কর্মী। সরকারের কাছে টুম্পার একটাই আবেদন যদি এই কাজটা স্থায়ীভাবে হয় তাহলে আগামী দিনের জীবনটা তাঁর সুগম হবে।
কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুরজিৎ পুরকাইত বলেন, “টুম্পা খুব সংগ্রামী মেয়ে এবং যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে তিনি শ্মশানে কাজ করেন। আজকের দিনে টুম্পা সমাজকে একটা বার্তা দিয়ে দিল, জীবনে কোনও কাজই ছোট নয়, লড়াই কখনও হেরে যায় না। টুম্পা যে কাজটা করেন আমরা তাঁকে কুর্নিশ জানাই”।





