ফাইজান আহমেদ থেকে সাওন মালিক, কে. কিরণ চন্দ্রা, দেবিকা পিল্লাই- একের পর এক উজ্জ্বল নক্ষত্ররা হারিয়ে গেছে অকালেই। সকলের ক্ষেত্রেই অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সিলমোহর দিয়েছে পুলিশ ও আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ।
অত্যধিক চাপ সহ্য করতে না পেরে ভুল পথ বেছে নিয়েছে তাঁরা। এবার সেই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা, IIT খড়্গপুরের মেধাবী পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে তথা এক চাপ মুক্ত পড়াশোনার পরিবেশ (অ্যাকাডেমিক লাইফ) গড়ে তুলতে বিশেষ ভাবনা আইআইটি খড়্গপুরের।
advertisement
আরও পড়ুন- জেল থেকে বেরিয়ে এই প্রথমবার, হাবরায় গিয়ে চমকে দিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক! যেন উৎসবের মেজাজ
আইআইটি-তে পড়তে আসা পড়ুয়ারা যাতে নির্বিঘ্নে পড়াশোনা করতে পারে, তাদের যাতে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকে সেই জন্য, সরোজিনী নাইডু ইন্দিরা গান্ধী হোস্টেলে (SNIG হোস্টেলে) উদ্বোধিত হল জেন লাউঞ্জ (Zen Lounge) এর। ছাত্রছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখার সঙ্গে তাঁদের এক সুন্দর, চাপমুক্ত পাঠ্য-জীবন (অ্যাকাডেমিক লাইফ) উপহার দেওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছে আইআইটি খড়্গপুর।
অবশ্য আইআইটি খড়্গপুরের এই উদ্যোগ মূলত যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, তিনি প্রতিষ্ঠানেরই এক প্রাক্তনী ভিজি নারায়ণন (Viji Narayanan)। ১৯৮৬-‘৯১ সাল পর্যন্ত ভিজি আইআইটি খড়্গপুরের ছাত্রী ছিলেন। তাঁর এই অসাধারণ ভাবনাটি সাদরে গ্রহণ করে বিষয়টিকে আইআইটি খড়্গপুর প্রাক্তনী সংসদ, আমেরিকার (IIT Kharagpur Alumnie Foundation, America) পার্থ ঘোষ এবং অশোক দে সরকার প্রচলিত ‘উইমেন ইন লিডারশিপ’ (Women in LeadersLeadership)-র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
খুব অত্যাধুনিক ব্যবস্থা সম্পন্ন এই লাউঞ্জ। আইআইটি খড়্গপুর সূত্রে জানা গেছে, অত্যাধুনিক এই জেন লাউঞ্জে প্রবেশ করলেই পড়ুয়ারা এক আশ্চর্য প্রশান্তি অনুভব করতে পারবেন। এর নক্সা বা কারুকার্য ঠিক সে ভাবেই করা হয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তথা প্রকৃতির আলো, বাতাস, সজীবতা উপলব্ধি করতে পারবেন পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন- রাত তিনটেয় ঘটল ঘটনাটা! সোদপুর স্টেশনে ১১ ঘণ্টা পড়ে ‘বাপ্পা’র দেহ! শিউরে ওঠা ঘটনা
এক কথায় এক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মাঝে ছাত্রছাত্রীরা যোগা, ধ্যান (মেডিটেশন)- প্রভৃতির মধ্য দিয়ে নিজেদের চাপমুক্ত রাখতে পারবে। এতে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্য বা অন্তরশক্তি (বা, মানসিক শক্তি) আরও বিকশিত হবে বলে জানিয়েছেন আইআইটি খড়্গপুরের ডেপুটি ডিরেক্টর অধ্যাপিকা রিন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়।
আইআইটি খড়্গপুরের প্রাক্তনী ভিজি নারায়ণন বলেন, “আইআইটি খড়্গপুরের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা ও গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। প্রতি মুহূর্তে নানা উদ্ভাবনী বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হয়। তাই সবার আগে তাঁদের মানসিক শান্তি ও খুশির প্রয়োজন। প্রয়োজন শরীর ও মনের সু-সংযোগ। জেন লাউঞ্জ পড়ুয়াদের শারীরিক ও মানসিকভাবে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলেই আমাদের মনে হয়। পড়ুয়াদের এই সুস্থতা ও শক্তির খুব প্রয়োজন।”
উল্লেখ্য, এই জেন লাউঞ্জে একদিকে যেমন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত প্রাক্তনীরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে বর্তমান পড়ুয়াদের সঙ্গে নানা বিষয় আলোচনা ও পরামর্শ দান করবেন; ঠিক তেমনই সশরীরেও নানা ক্লাস করানো হবে। পড়ুয়াদের চাহিদা অনুযায়ী যোগা, মেডিটেশন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ।
রঞ্জন চন্দ