কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন রাজেশ সিং। এক মাস আগেই গল ব্লাডার অপারেশন হয় তাঁর। তারপর থেকে অফিস যাওয়া বন্ধ করে দেন রাজেশ। লিলুয়া থানার বেলগাছিয়া ওয়াই রোডের বাড়িতে তিন ভাইয়ের সঙ্গে সপরিবারে থাকতেন রাজেশ। শুক্রবার রাত ১২-টায় শেষ দেখা যায় রাজেশকে। শনিবার বেলা পর্যন্ত রাজেশ, সবিতা বাইরে না বেরোলে দরজা ধাক্কা দেন আত্মীয়রা। সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ফেলেন তাঁরা। ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় দুজনের মৃতদেহ। উদ্ধার হয় একটি দেশী বন্দুকও। পারিবারিক অশান্তির জেরে স্ত্রী-কে শ্বাসরোধ করে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন রাজেশ। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান পুলিশের।
advertisement
ঘরে খাটের উপর পড়ে ছিল সবিতার দেহ। বিছানায় ধস্তাধস্তির চিহ্ন স্পষ্ট। পুলিশের অনুমান সবিতাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন রাজেশ। পরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে নিজের ডান দিকের কপালে গুলি করে আত্মহত্যা করেন রাজেশ।
আলমারির নিচ থেকে উদ্ধার হয় দেশী পিস্তল। সেটি গান শেল ফ্যাক্টরির কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কি কারণে এমন ঘটনা ? জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্ক থেকে ক্রেডিট কার্ডে লোন নিয়েছিলেন রাজেশ। ঋণ শোধের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে বার বার হুমকি আসছিল তাঁর কাছে। শুক্রবার সন্ধেবেলা রাজেশের বৌদির কাছে দিল্লির একটি ব্যাঙ্ক থেকে ফোন আসে। তাতে জানানো হয় লোন শোধ না করলে রাজেশের চাকরি নিয়ে টানাটানি হবে। নেওযা হবে আইনি পদক্ষেপও। একই কথা শোনা গেছে সবিতার মায়ের মুখেও।
নিঃসন্তান ছিলেন রাজেশ ও সবিতা । ঘটনার পিছনে পারিবারিক অশান্তির বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর----
----রাজেশের দাদা রাকেশ সিংও চাকরি করেন কাশীপুর গান শেল ফ্যাক্টরিতে
----রাজেশের বড় দাদা কোনও কাজ করেন না
----দাদার মেয়ের পড়ার খরচ চালাতেন রাজেশ
----দাদাদের পরিবারে টাকাও খরচ করতেন দেদার
--তাই নিয়ে স্ত্রী সবিতার সঙ্গে নিত্য অশান্তি লেগে থাকত তাঁর
---প্রায়েই স্ত্রী-কে খুন করে আত্মঘাতী হওয়ার কথা বলতেন রাজেশ
---মা-কে বিষয়টি জানান সবিতা
যে নম্বর থেকে ব্যাঙ্কের নামে হুমকি ফোন এসেছিল রাজেশের কাছে, সেই নম্বর ট্রেস করে তদন্ত এগোতে চাইছে পুলিশ। মাত্র ৬৬ হাজার টাকা শোধের জন্য এই দরণের ঘটনা কেন ঘটালেন রাজেশ, তাই নিয়েও তৈরি হয়েছে ধন্দ। সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।