রৌদ্রের প্রখর তাপে জ্বলছে আমন ধানের বীজতলা। জেলার প্রতিটি ব্লকে কৃষকদের সরকারিভাবে ধানের বীজ দেওয়া হলেও সেই বীজতলা শুকিয়ে গেছে। সেচের জন্য় ক্য়ানাল বা খালেও পর্যাপ্ত জল নেই। ফলে বৃষ্টির জলই ভরসা। জেলার আরামবাগ, হরিপাল, সিঙ্গুর, তারকেশ্বর, পান্ডুয়া, পোলবার ছবি একই রকম। বৃষ্টির অভাবে ধান চাষ মার খাওয়ায় আগামী মরশুমে ধানের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে রাজ্যের কৃষি দফতর।
advertisement
অনাবৃষ্টির জেরে কাটোয়ার ডাঁটা চাষে ব্যাপক ক্ষতি। কাটোয়া মহকুমার ৩০০ হেক্টর জমিতে এবার সবজি চাষ করা হয়। তার মধ্য়ে ১৫০ হেক্টর জমিতে ডাঁটার চাষ হয়েছিল। কিন্তু প্রখর রোদে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি সবজি গাছ।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১৫ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্ট পর্যন্ত সময়কে ধান রোয়ার ভরা মরশুম বলে ধরা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জেলায় চল্লিশ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। বিহার ঝাড়খণ্ডেও আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় ডিভিসিও পর্যাপ্ত জল ছাড়েনি। বৃষ্টির অভাবে মাঠেই বীজধান হলুদ হয়ে গিয়েছে। এই বীজে ফলন মেলার আশা নেই। ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে খরিফ চাষ হওয়ার কথা থাকলেও, এখনও পর্যন্ত ৭-৮ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ফলনের এই দুর্দশায় মাথায় হাত চাষীদের।
পুরুলিয়াতে কার্যত তৈরি হয়েছে খরা পরিস্থিতি। বৃষ্টির অভাবে খেতের বীজতলা শুকিয়ে যাওয়াতে এখন মাথায় হাত চাষীদের। পুরুলিয়াতে মূলত আমন ধানের চাষের উপরেই নির্ভর করে থাকেন চাষীরা। জেলার সেচের ব্য়বস্থা উন্নত না হওয়ায় বৃষ্টির জলের উপরেই ভরসা করতে হয় জেলার চাষীদের। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এই মরশুমে আমন ধান চাষের সম্ভাবনা প্রায় শেষ। আর্থিক ভাবেও চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষীরা।
উত্তরবঙ্গে যখন অতিবৃষ্টিতে নাজেহাল মানুষ, দক্ষিণবঙ্গে তখন টানা বৃষ্টির জন্য় আকাশের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা। একদিকে খাদ্য়শস্য়ের ঘাটতি অন্য়দিকে ব্য়াপক আর্থিক ক্ষতি। ভরা বর্ষায় এই করুণ ছবি এখন দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে।